ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা, শিক্ষকের পদত্যাগ
ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন চেষ্টার অভিযোগ ওঠায় পদত্যাগ করেছেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক নাহিদ সৈকত।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বোর্ড অব ট্রাস্টি, সকল ফ্যাকাল্টির ডিন এবং সকল বিভাগের চেয়ারম্যানদের নিয়ে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ ওই সভায় তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়৷
বিজ্ঞাপন
বুধবার (২১ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন তার পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন৷
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার প্রলোভনে ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করতেন নাহিদ৷ সম্পর্ক স্থাপনে কেউ অস্বীকৃতি ও মুখ খোলার চেষ্টা করলেও তাদের নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখাতেন তিনি৷ কিন্তু সর্বশেষ অনৈতিকভাবে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা এবং নম্বর বণ্টনের বিষয়ে একাধিক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর অভিযোগ করেন৷ পরবর্তীতে অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি আমলে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন৷
বিজ্ঞাপন
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় অভিযুক্ত শিক্ষক নাহিদ সৈকতসহ অনেকেই এমন অপেশাদার আচরণ করেন৷ তাদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভাগ সেটি আমলে নেয় না। তবে নাহিদ সৈকতের বিষয়টি উন্মোচিত হওয়াটা প্রশংসনীয়৷
ইংরেজি বিভাগের একাধিক শিক্ষক অভিযোগ জানিয়ে বলেন, নাহিদ একটি চক্রের মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছিলেন৷ তার নিয়োগ দেওয়ার আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি চক্র কাজ করেছে। নিয়োগ বোর্ডের একাধিক সদস্যই ছিলেন জবির৷তার বোর্ডে একই পদের জন্য একাধিক যোগ্য প্রার্থী থাকলেও বিশেষ সুপারিশে নিয়োগ পান নাহিদ সৈকত৷ ইংরেজি বিভাগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সিন্ডিকেট করতেই এ নিয়োগ দেওয়া হয়৷
নাহিদ যে বোর্ডে নিয়োগ পান সে বোর্ডের এক্সটারনাল এক্সপার্ট ছিলেন তারই বিভাগের (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ৷ আমাদের ডিআইইউ থেকে ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে সেখানে ছিলেন জবির সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমান আমাদের চেয়ারম্যান এস জুবাইর আল আহমেদ৷ শুধু নাহিদ নয় তারা একটি চক্র করে সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে দীর্ঘদিন অপেশাদার আচরণ করে আসছেন৷
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক নাহিদ সৈকতের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি পদত্যাগ করেছি বিষয়টি সত্য৷ অভিযোগ দেওয়া হয়েছে সেটাও সত্য৷ কিন্তু তদন্ত হয়েছে কিনা জানি না। অভিযোগগুলো মিথ্যা৷
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাজ্জাদ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখেছি৷ অভিযোগের সব ডকুমেন্টস সংগ্রহ করেছি৷ তাকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ ওই সভায় সকল বিভাগের চেয়ারম্যানসহ গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাকাল্টি মেম্বাররা উপস্থিত ছিলেন৷ অবশেষে আজ তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন৷ আমরা তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছি৷
এমএম/এসকেডি