ঈদের আগে সারা দেশে কারিগরি ও মাদ্রাসা পর্যায়ের সাড়ে ১২ হাজার শিক্ষার্থী-শিক্ষক, ৪২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাতে ৭ কোটি টাকার অনুদান পৌঁছে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ। মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম ‌‘নগদ’-এর মাধ্যমে এ টাকা সরাসরি শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানগুলোর অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২৫ জুন) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়।

এতে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের বিশেষ অনুদানখাতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ৭ কোটি টাকা দিয়েছে সরকার। এরমধ্যে মোট শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ হাজার ৫০০ জন এবং ৪২০টি কারিগরি ও মাদ্রাসা এ টাকা পাবে। একইসঙ্গে বিশেষ অনুদানের জন্য নির্বাচিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

যারা পাচ্ছে এ টাকা

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, মোট ১২ হাজার ৫০০ শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে এ অনুদানের টাকা দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৭০০ শিক্ষক-কর্মচারী পাবেন ১০ হাজার টাকা করে। তাদের জন্য বরাদ্দ ৭০ লাখ টাকা। ইবতেদায়ির (১ম থেকে ৫ম) ১ হাজার ৭৫০ শিক্ষার্থী ৩ হাজার টাকা করে মোট ৫২ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাবেন।

৬ষ্ঠ থেকে ১০ম (দাখিল ও ভোকেশনাল স্তর) পর্যন্ত ৬ হাজার ৩০০ শিক্ষার্থী ৫ হাজার টাকা করে মোট ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা পাবেন। এছাড়াও এইচএসসি (বিএম/আলিম/ডিপ্লোমা) পর্যন্ত ১ হাজার ৭৫০ শিক্ষার্থীকে ৬ হাজার টাকা করে মোট ১ কোটি ৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে। ফাজিল ও কামিল বা তদূর্ধ্ব শ্রেণি পর্যন্ত ৭৫০ জনকে সাত হাজার টাকা করে মোট ৫২ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।

এছাড়া ৪২০টি কারিগরি ও মাদ্রাসাকে ২৫ হাজার টাকা করে মোট ১ কোটি ৫ লাখ টাকা করে বিশেষ অনুদান দেওয়া হয়েছে। নগদ-এর মাধ্যমে এ টাকা পাঠানো হচ্ছে। ঈদের আগে এই টাকা তারা পাবেন বলে আদেশে বলা হয়েছে।

যেভাবে দেওয়া হয় এ অনুদান

অনুদানের এ টাকা কারা পাবেন তার একটি নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত আবেদন নেওয়া হয়। আবেদন পাওয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করে অনুদানের টাকা ছাড় করা হয়েছে।

নীতিমালায় থেকে জানা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রী এ তিন ক্যাটাগরিতে অনুদান দেওয়া হয়। সরকারি ও বেসরকারি এমপিওভুক্ত এবং নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা, দৈব–দুর্ঘটনা ও চিকিৎসার খরচের জন্য বিশেষ মঞ্জুরির অনুদান প্রাপ্তির আবেদন করতে পারেন।

এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী, অসহায়, অসচ্ছল ও মেধাবী, অনগ্রসর সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পেয়েছে। এছাড়া দেশের সব স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বা এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মেরামত ও সংস্কার, আসবাব তৈরি, খেলাধুলার সরঞ্জাম ক্রয়, পাঠাগার উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীবান্ধব করতে বিশেষ মঞ্জুরির অনুদানের আবেদন করে। তবে বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনগ্রসর এলাকার অসচ্ছল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অগ্রাধিকার পায়। আর বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা দুরারোগ্য ব্যাধি বা দৈব–দুর্ঘটনার জন্য মঞ্জুরির আবেদন করতে পারেন।

এছাড়া দেশের সব স্বীকৃতি প্রাপ্ত বা এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মেরামত ও সংস্কার, আসবাবপত্র তৈরি, খেলাধুলার সরঞ্জাম ক্রয়, পাঠাগার উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী বান্ধব করার জন্য বিশেষ মঞ্জুরির অনুদানের আবেদন করতে পারে। তবে বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনগ্রসর এলাকার অসচ্ছল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অগ্রাধিকার পাবে।

যেভাবে আবেদন করতে হয়

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের এই অনুদান পেতে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানের আর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিভাগীয় প্রধানের প্রত্যয়নপত্র আবেদনে সংযুক্ত করতে হবে। শিক্ষক-কর্মচারী ক্যাটাগরিতে আবেদনের ক্ষেত্রে চিকিৎসক সনদ ও দৈব দুর্ঘটনার স্বপক্ষের প্রমাণ সংযুক্ত করে আবেদন করতে হবে। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য অনুদানের আবেদনের ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটির প্রত্যয়ন সংযুক্ত করতে হবে। শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অনুদান বাবদ বরাদ্দের টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বরাদ্দের টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়।

এনএম/ওএফ