উত্তরা ন্যাশনাল পাবলিক কলেজের ফাইল ছবি

অর্থের বিনিময়ে জিপিএ-৫ বিক্রির প্রলোভন দেখানোর দায়ে রাজধানীর উত্তরা ন্যাশনাল পাবলিক কলেজের পাঠদানের স্বীকৃতি বাতিল করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।

রোববার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ড. হারুন-অর-রশিদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে কলেজটির পাঠদানের অনুমতি বাতিল করে এক আদেশ জারি করা হয়।

পাঠদান বাতিল করার জন্য সাতটি কারণ উল্লেখ করে শিক্ষা বোর্ড বলছে- বোর্ডের তদন্তে কলেজে বৈধ কোনো শিক্ষক ও কমিটি পাওয়া যায়নি, ছিল না পাঠদানের নবায়ন, কোনো ল্যাবরেটরি নেই।

কলেজের কথিত চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের স্ত্রী উক্ত কলেজে একজন শিক্ষক পরিচয় দিলেও সেটির কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই।

কলেজটিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসা শাখায় আলাদা আলাদা ৩০০ আসন বরাদ্দ থাকলেও সেখানে কাম্য শিক্ষার্থী ছিল না। এছাড়াও কলেজটির বিরুদ্ধে ফরম ফিলাপ ও টিসির বদলে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, বোর্ডের আদেশ অমান্য করা, কলেজের জমি ও নিজস্ব ভবনের শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ার প্রমাণ পেয়েছে কমিটি।

এছাড়াও সেখানকার কথিত চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের জিপিএ-৫ বাড়িয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়েছে বলে প্রমাণ মেলায় কলেজটির পাঠদানের অনুমতি বাতিল করেছে বোর্ড।

চিঠিতে জানানো হয়, এ আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে কলেজে অধ্যয়নরত বর্তমান শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে আসন খালি থাকা সাপেক্ষে পাশের কোনো প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হবে।

জানা গেছে, ২০১৮ সালে ৯ জানুয়ারি বেসরকারি টেলিভিশনের প্রচারিত টাকার বিনিময়ে জিপিএ-৫ বিক্রি শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী সংবাদ প্রচারিত হওয়ার পর শিক্ষাবোর্ড সেটি আমলে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে।

তদন্তে ন্যাশনাল পাবলিক কলেজের কথিত চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে জিপিএ বাড়িয়ে দেওয়ার যে প্রলোভন দেখিয়েছেন তার সত্য প্রমাণিত হয়েছে। এর আগে কলেজটির বিরুদ্ধে জিপিএ-৫ বিক্রির নামে প্রতারণার অভিযোগ আসায় ২০১৯ সালের মে মাসে কলেজের পাঠদান কার্যক্রম স্থগিত করেছিল ঢাকা বোর্ড।

সে আদেশ বাতিল চেয়ে রিট করে ন্যাশনাল পাবলিক কলেজ কর্তৃপক্ষ। পরে পাঠদান কার্যক্রম স্থগিত করার আদেশটি আদালত ২০২০ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত স্থগিত করে। আদালতের দেওয়া সে সময় শেষ হয়েছে। বর্তমানে হাইকোর্টের নতুন আর কোনো আদেশ না থাকায় কলেজটির পাঠদানের অনুমতি বাতিল করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।

এনএম/এমএইচএস