ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, দক্ষ প্রোগ্রামার তৈরি করতে পারলে দেশে ও দেশের বাইরে কর্মসংস্থানের অভাব হবে না। করোনা মহামারিতে বিশ্বব্যাপী সাধারণ চাকরির সুযোগ সংকোচিত হলেও দক্ষ আইটি প্রফেশনালদের চাহিদা বেড়েছে। 

বাংলাদেশে ডিজিটাল অবকাঠামো ও সেবা সম্প্রসারণে অভাবনীয় সফলতা অর্জন করলেও শিক্ষায় ডিজিটাল রূপান্তরে অগ্রগতি আশানুরূপ নয়। এই লক্ষ্যে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে ডিজিটাল শিক্ষা দেওয়ার বিকল্প নেই। 

শুক্রবার রাতে ঢাকায় অতীশ দীপংকর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ‘কোভিডকালে চাকরির সুযোগ এবং আইটি খাতের চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

শনিবার (২৬ জুন) মন্ত্রীর দফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

অতীশ দীপংকর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নাসিম আক্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হাফিজ মো. হাসান বাবু, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. নাসির উদ্দিন এবং স্যামসন আরঅ্যান্ডডির নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আসাদ বক্তব্য রাখেন।

মন্ত্রী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কম্পিউটার বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতার সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। এখনই নতুন প্রজন্মকে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে না পারলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব হবে না।
 
তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিক্স, আইওটি, ব্লকচেইনসহ আগামী দিনের প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার জন্য ডিজিটাল দক্ষতা তৈরি করা অপরিহার্য। এক্ষেত্রে জনগোষ্ঠীর সবাইকে বিশেষজ্ঞ হতে হবে না। ন্যূনতম ডিজিটাল দক্ষতা না থাকলে টিকে থাকতে পারবো না। ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের প্রচেষ্টা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করতে হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আমরা ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রোগ্রামিংসহ ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা দেওয়ার একটি উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছি। 

'গত ১২ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বে বাংলাদেশে ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে উঠেছে। অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করেও আজকের বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অংশগ্রহণের জন্য সম্পূর্ণভাবে তৈরি'- যোগ করেন মন্ত্রী। 

তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের মধ্যে ফাইভ-জি প্রযুক্তি দৃশ্যমান হবে, যা অনেক দেশ চিন্তাও করতে পারেনি। করোনাকালে আমরা শতকরা ৯০ ভাগ মোবাইল টাওয়ার ৪জি নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি। বছরে দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকা মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি। 

দেশীয় মোবাইল কারখানা থেকে ৫জি মোবাইল উৎপাদন ও বিদেশে রফতানি হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশের শতকরা ৭০ ভাগ মোবাইলের চাহিদা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মোবাইল থেকে মেটানো সম্ভব হচ্ছে। এছাড়া ৬০০ ডিজিটাল সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় কোভিডকালে ঘরে বসে অফিস আদালত পরিচালনা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামের শিশুটিও অনলাইনে পড়ালেখা করতে পারছে। হাওর, দ্বীপ ও প্রত্যন্তচরসহ দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইভারের মাধ্যমে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার কাজও প্রায় শেষের দিকে।

এসআর/এসএম