রিটকারী আড়াই হাজার নিবন্ধনধারীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগদানের সুপারিশের বিষয়ে হাইকোর্টের রায় বাতিল করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ফলে ৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করতে আর কোনো বাধা নেই বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ)। 

এনটিআরসিএ সূত্র বলছে, আগামী দু-একদিনের মধ্যেই তারা ৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগের ফল প্রকাশ করতে চায়। এ নিয়ে করণীয় ঠিক করতে সোমবার (২৮ জুন) বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন এনটিআরসিএ-র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এসময় সচিব তাদের বেশকিছু দিক নির্দেশনা দেন।

এনটিআরসিএ-র একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সচিব মহোদয় আমাদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। এর মধ্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সঙ্গে পরামর্শের নির্দেশ দিয়েছেন। তার পরামর্শক্রমে ফল প্রকাশ করা হবে। আগামীকাল (মঙ্গলবার) দুপুরের পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানা যাবে বলে জানান তিনি।

এর আগে সোমবার (২৮ জুন) সকালে এনটিআরসিএ-র বিরুদ্ধে জারি করা আদালত অবমাননার রুল খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর সচিব ড. এ টি এম মাহবুব-উল করিম বলেন, ‘বহুল কাঙ্ক্ষিত এ রায় আমাদের পক্ষে এসেছে। টেলিটকের সঙ্গে আমাদের কথা বলতে হবে। আশা করছি কালকের মধ্যেই ফল প্রকাশ করতে পারব।’

জানা গেছে, ১-১২তম নিবন্ধনধারী কিন্তু শিক্ষক হিসেবে কোথাও নিয়োগ পাননি এমন আড়াই হাজার ব্যক্তি হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেছিলেন। তাদের আবেদন ছিল, এনটিআরসিএ যে প্রক্রিয়ায় (মেধার ভিত্তিতে) ১-১৫তম নিবন্ধনধারীদের মধ্য থেকে ৫৪ হাজার জনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করার জন্য বাছাই করেছে তা বাতিল করে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে তাদেরকে (রিটকারীদের) নিয়োগের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হোক। 

হাইকোর্ট রিট আমলে নিয়ে এই আড়াইহাজার জনকে নিয়োগ দিতে এনটিআরসিএ-কে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এনটিআরসিএ হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে। আজ (সোমবার) আপিল বিভাগ হাইকোর্টের ওই রায় বাতিল করে দেন।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষক নিয়োগের জন্য তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি শান্ত আহমেদ বলেন, অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে আপিল ডিভিশনের রায় নিজেদের পক্ষে আনার জন্য সাধারণ নিবন্ধনধারীদের পক্ষ থেকে এনটিআরসিএকে ধন্যবাদ। আমরা চাই গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ফল প্রকাশের ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এনটিআরসিএ আর কোনো সময় ক্ষেপণ না করুক।

তিনি বলেন, সাধারণ নিবন্ধনধারীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত ফলের জন্য আর বিন্দুমাত্র ধৈর্য ধরতে রাজি নন। কারণ, অপেক্ষা করতে করতে তাদের জীবনের অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট হয়ে গেছে। মেধাতালিকা ও শতভাগ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে এনটিআরসিএ নিয়োগের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

এনএম/আরএইচ/জেএস