বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের বিপরীতে ৫৪ হাজার শিক্ষককে কবে নিয়োগের সুপারিশ করবে জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) তা নিয়ে আবারও ধোয়াঁশা সৃষ্টি হয়েছে। নিয়োগপ্রত্যাশীদের মধ্যে এ নিয়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক অসন্তোষ। 

এনটিআরসিএ বলছে, রিটকারী আড়াই হাজার নিবন্ধনধারীকে নিয়োগ দিতে হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করে আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের সার্টিফাইড কপি হাতে পাওয়ার পর ফল প্রকাশ করা হবে।

কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে হেরেও রিটকারী আড়াই হাজার চাকরিপ্রার্থী বলছেন, আইনি লড়াই তারা ছাড়বেন না। আপিল ডিভিশনের রায়ের ওপর এখন তরা রিভিউ আপিল করবেন। যদি তেমন কিছু হয় তাহলে রিভিউর রায় না আসা পর্যন্ত ৫৪ হাজারের চূড়ান্ত ফল আটকে থাকবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ-র সচিব ড. এ টি এম মাহবুব-উল করিম বলেন, আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। এ রায় যুগান্তকারী। কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে আশা করছি ৩/৪ দিনের মধ্যে রায়ের সার্টিফাইড কপি হাতে পাব। কপি হাতে পাওয়ার পরই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫৪ হাজার নিয়োগের ফল প্রকাশ করা হবে।

ড. এ টি এম মাহবুব-উল করিম বলেন, ফল প্রকাশের জন্য আনুষাঙ্গিক সব ধরনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

এদিকে রিটকারী আড়াই হাজার শিক্ষক নিয়োগ প্রত্যাশীদের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর বিচার-বিশ্লেষণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ (রিভিউ) নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

জানা গেছে, গত ২৯ জুন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এর সঙ্গে ৫৪ হাজার নিয়োগের ফল প্রকাশ নিয়ে পরামর্শ করেন এনটিআরসিএর কর্তৃপক্ষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈঠকে উপস্থিত এক এনটিআরসিএ কর্মকর্তা বলেন, উপমন্ত্রী রায়ের সার্টিফাইড কপি হাত পাওয়ার পর আইনজীবীদের মাধ্যমে রায় বিচার-বিশ্লেষণ করে তারপর ফল প্রকাশ করার বিষয়ে জোর দিয়েছেন।

দ্রুত ফল প্রকাশ চান চাকরি প্রত্যাশীরা

তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ প্রত্যাশী মো. শান্ত আহমেদ বলেন, অনেক দিন যাবত আমরা এই নিয়োগের ফলের আশায় আছি। দীর্ঘ ২ বছর পর এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। করোনার এই মহামারিতে অন্যান্য নিয়োগ পরীক্ষাও বন্ধ। তাই আমরা চাই দ্রুত এনটিআরসিএ ফলাফল ঘোষণা করুক।

আরেক নিয়োগ প্রত্যাশী মাঈন উদ্দিন বলেন, এই নিয়োগে আবেদনের জন্য অনেক কষ্ট করে টাকা জোগাড় করেছিলাম। এতদিন পার হলেও এখনো ফল প্রকাশ হয়নি, যা দুঃখজনক। এনটিআরসিএ-র কাছে দ্রুত এ নিয়োগের ফল প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি।

তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ প্রত্যাশী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি আবু বক্কর বলেন, ফল প্রকাশ নিয়ে এনটিআরসিএ যে তালবাহানা শুরু করেছে, তা মানা যায় না। আমরা যেকোনো উপায়ে দ্রুত ফল প্রকাশ করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সব দফতরের হস্তক্ষেপ চাই।

তিনি আরও বলেন, করোনার এই সময়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উচ্চশিক্ষিত বেকাররা। একদিকে কোনো নিয়োগ পরীক্ষা নেই, অন্যদিকে চাকরির বয়সও শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমরা এক গভীর সংকটের মধ্যে আছি। পরিবারের সবাই এই নিয়োগের ফলের আশায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

এনএম/এমএইচএস/জেএস