গত বছর এইচএসসির ফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থীদের উল্লাস, এবার হয়তো এমন চিত্র দেখা মিলবে না | ফাইল ছবি

>> সোমবার মন্ত্রিসভায় উঠছে ফল প্রকাশ সংক্রান্ত বিশেষ অধ্যাদেশ
>> পরবর্তী দুদিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন ও রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর
>> বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ হতে পারে এইচএসসির ফল 

করোনার কারণে বাতিল হওয়া ২০১৯ সালের এইচএসসি ও সমমানের ফল চলতি সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ হবে। সে লক্ষ্যে সোমবার (১১ জানুয়ারি) মন্ত্রিসভায় উঠছে এইচএসসি’র ফল সংক্রান্ত ‘বিশেষ অধ্যাদেশ’। মন্ত্রিসভায় সায় মিললে পরের দুদিনের মধ্যে ফল প্রকাশ হবে।

আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন এবং রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর এ দুদিনের মধ্যে নেওয়ার প্রস্তুতি সেরে রেখেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অর্থাৎ মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পরপরই ফল প্রকাশে আর কোনো জটিলতা থাকবে না।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) মন্ত্রিসভার বৈঠকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল সংক্রান্ত ‘বিশেষ অধ্যাদেশটি’ উঠছে বলে কিছুক্ষণ আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে

মো. মাহবুব হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব

এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোমবার (১১ জানুয়ারি) মন্ত্রিসভার বৈঠকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল সংক্রান্ত ‘বিশেষ অধ্যাদেশটি’ উঠছে বলে কিছুক্ষণ আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে। সোমবার মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হলে আগামী দুদিনের মধ্যে ফল প্রকাশ হবে। সেই প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।    

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামীকাল সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এইচএসসির বিশেষ অধ্যাদেশটি উত্থাপন করবে মন্ত্রণালয়। মন্ত্রিসভার সায় মিলিয়ে অনুমোদনের জন্য তা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এমন সূচি ধরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। তিনি বৃহস্পতিবার সময় দিলে ওইদিনই আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ হবে।

আগামী বুধ অথবা বৃহস্পতিবারের (১৩-১৪ জানুয়ারি) মধ্যে ফল প্রকাশের জন্য আমরা প্রস্তুত

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ

এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ফল প্রকাশের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। সোমবার মন্ত্রিসভায় বিশেষ অধ্যাদেশটির অনুমোদন পেলে রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে। সেখানে অনুমোদন মিললে ফল প্রকাশের আইনি প্রক্রিয়া শেষ হবে। তারপর যেকোনো সময় ফল প্রকাশ করতে কোনো বাধা থাকবে না।

তিনি বলেন, আগামী বুধ অথবা বৃহস্পতিবারের (১৩-১৪ জানুয়ারি) মধ্যে ফল প্রকাশের জন্য আমরা প্রস্তুত।

এর আগে মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) অনলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে বিশেষ পরিস্থিতিতে এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে একটি অধ্যাদেশ জারি করতে হবে।

২০১৯ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ এপ্রিল থেকে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় সরকার

‘কারণ পরীক্ষার ফল সংক্রান্ত আইন রয়েছে, বিশেষ পরিস্থিতিতে ফল প্রকাশের জন্য একটি অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। এটি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জারি করা হবে।’

জানা গেছে, ২০১৯ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ এপ্রিল থেকে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় সরকার।

এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় গত ৭ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, পঞ্চম ও অষ্টমের সমাপনীর মতো এইচএসসি পরীক্ষাও এবার নেওয়া যাচ্ছে না। সেদিন তিনি বলেছিলেন, জেএসসি ও এসএসসির ফলের গড় করে এবারের এইচএসসির ফল নির্ধারণ করা হবে।

মন্ত্রী আরও জানান, জেএসসি-জেডিসির ফলের ২৫ শতাংশ এবং এসএসসির ফলের ৭৫ শতাংশ বিবেচনায় নিয়ে এইচএসসির ফল ঘোষণা করা হবে।

এনএম/এমএআর