সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) বার্ষিক প্রতিবেদন ২০১৯ অনুযায়ী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গবেষণা সংখ্যা শূন্য। তাহলে প্রশ্ন উঠছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষণা খাতের টাকা কোথায় ব্যয় হলো।

গত ৬ জানুয়ারি প্রকাশিত ইউজিসির ৪৬তম বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে জবি ছাড়াও আরও ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণা শূন্য দেখানো হয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে জবির গবেষণা খাতে বরাদ্দ ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। যার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় এক কোটি টাকা ও ইউজিসি ২৫ লাখ টাকা বহন করবে। 

তবে ইউজিসি গবেষণা সংখ্যা শূন্য বললেও, ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত বিশেষ জার্নালে দেখা যায়, ওই শিক্ষাবর্ষে মোট বাস্তবায়ন হওয়া প্রকল্প ছিল ১৪৩টি।

আন্তর্জাতিক প্রকাশনা আছে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সুরঞ্জন কুমার দাসের একটি, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. নূরে আলম আবদুল্লাহর ২টি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্বামীর ১টি, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল কালাম লুৎফুর রহমানের ২টি, একই বিভাগের ড. শাহাজানের ৩টি। এছাড়াও গবেষণাধর্মী গ্রন্হ প্রকাশ পেয়েছে ১০টি।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মোট অধ্যাপকের সংখ্যা ৯৬ জন। যার মধ্যে পিএইসডি শেষ করেছেন ৯৪ জন। বাকি ২ জন পিএইসডি অধ্যায়নরত। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে এমফিল ও পিএইচডি শিক্ষার্থী সংখ্যা যথাক্রমে ৩৫ ও ২৮। 

এছাড়াও ৬ অনুষদ থেকে, জার্নাল অফ সাইন্স, জার্নাল অফ আর্টস জার্নাল অফ সোশ্যাল সাইন্স, জার্নাল অফ বিজনেস স্ট্যাডিজ, জার্নাল অফ সাইকোলজি, জার্নাল অফ ল' নামে ৬টি জার্নাল প্রকাশিত হচ্ছে।

তাহলে প্রশ্ন দাঁড়াচ্ছে ইউজিসি কেনো এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য দেখালো। এমন আজগুবি তথ্যে বিব্রত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরাও।

জবির গবেষণা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. নূর আলম আবদুল্লাহ বলেন, কেনো গবেষণা সংখ্যা দেখানো হয়নি আমি কিছু বলতে পারবো না, ওই সময় আমি গবেষণা দপ্তরের দায়িত্বে ছিলাম না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অসহযোগিতাকে এর জন্য দায়ী করেছেন ইউজিসির সদস্য ও প্রতিবেদন সম্পাদনা পরিষদের অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বলেন, জগন্নাথের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে অবশ্যই গবেষণা থাকবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে চিঠি দিয়ে তথ্য আহ্বান করি। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বারবার যোগাযোগ করা হলেও সাড়া মেলে না। আমাদের চেষ্টা থাকে জুন-জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা। কিন্তু এ ধরনের সীমাবদ্ধতার কারণে সম্ভব হয় না। আগামীতে অনলাইনে অটোমেশনের চিন্তা-ভাবনা আছে আমাদের, যাতে এধরনের তথ্য বিভ্রাট মুক্ত থাকা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের বলেন, ইউজিসির সঙ্গে তথ্য গ্যাপ হয়েছে। যদি তারা তথ্য না পায়, লেখা উচিত ছিল তথ্য পাওয়া যায়নি।

এসএম