বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন

করোনার কারণে থমকে যাওয়া শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে ৪৩তম বিসিএস- এ আবেদনের সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা। এ বিষয়ে পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে চিঠি দিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) অনুরোধ করেছেন তারা।

রোববার (১৩ ডিসেম্বর) দেশের ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের সঙ্গে ইউজিসির ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে এ দাবি করেন ভিসিরা।

করোনা সংকটের কারণে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে পারবে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ইউজিসি।

ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ ভার্চুয়াল সভায় ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর, সদস্য প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেন, প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, প্রফেসর ড. আবু তাহের, ইউজসি সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান, জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের পরিচালক ড. শামসুল আরেফিন ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক কামাল হোসেন যুক্ত ছিলেন।

এ সময় ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর করোনার সময়ে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা এবং ব্যবহারিক ক্লাস ও মূল্যায়ন বিষয়ে সাতটি সুপারিশ তুলে ধরেন। 

সুপারিশগুলো হচ্ছে- স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটিগুলোর সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, কৃষি, চিকিৎসাসহ অন্যান্য শাখার অসমাপ্ত ব্যবহারিক ক্লাস এবং তার মূল্যায়ন স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যায়ক্রমে শেষ করা, সেমিস্টার পরীক্ষা, ব্যবহারিক ক্লাস ও মূল্যায়ন শেষ করার ক্ষেত্রে সর্বশেষ সেমিস্টারের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবে।

করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের নির্দেশনায় বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখা, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে পরীক্ষা ও ব্যবহারিক ক্লাস পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শেষ করতে হবে। এজন্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ও ব্যবহারিক ক্লাস শুরুর সর্বোচ্চ ১ ঘণ্টা আগে ক্যাম্পাসে প্রবেশ এবং শেষ হওয়ার ১ ঘণ্টার মধ্যে ক্যাম্পাস ত্যাগ করা, করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইনে চলা শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধকল্পে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক জারিকরা নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালন ও অনুসরণ করতে সুপারিশ করা হয়।

সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ডিনস কমিটি, একাডেমিক কাউন্সিলসহ সংশ্লিষ্ট কমিটি চূড়ান্ত  সিদ্ধান্ত নেবে। পরীক্ষার মান নিয়ে যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাড়াহুড়া না করে সক্ষমতা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে তিনি পরামর্শ দেন।

সভায় ভিসিরা জানান, করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনে পাঠদান অব্যাহত রয়েছে। অসমাপ্ত সেমিস্টার শেষ পর্যায়ে রয়েছে। পরীক্ষা না হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। তারা নিজেদের পরবর্তী সেমিস্টারের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে আলাদা করে নিচ্ছে। পরীক্ষা বা মূল্যায়ন না হলে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়বে। জাতীয় স্বার্থে পরীক্ষা নেওয়া দরকার।


এনএম/এসএম