ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের কারণে গত মার্চ মাস থেকে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ সময়ে টেলিভিশন-রেডিওর মাধ্যমে চালু ছিলো দূরশিক্ষণ কার্যক্রম। তবে মোট শিক্ষার্থীর ৬৫ শতাংশই এ কার্যক্রমে অংশ নেয়নি। বর্তমানে দেশের মোট শিক্ষার্থীর ৭৫ শতাংশই স্কুলে ফিরে আসতে চায়, এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীরা।

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মোর্চা গণস্বাক্ষরতা অভিযান পরিচালিত ‘এডুকেশন ওয়াচ’ তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ৭৬ শতাংশ অভিভাবক মনে করেন এখন স্কুলে খুলে দেওয়া উচিত। ৮০ শতাংশ এনজিও কর্মীরা মনে করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন খুলে দেওয়া যায়। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে এখনই স্কুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মত দিয়েছে ৫৮ শতাংশ শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা।

করোনার সময় ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী দূরশিক্ষণ ক্লাসে (সংসদ টিভি, অনলাইন, রেডিও ফোনে) অংশ নেয়নি। এরমধ্যে ৫৭ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী ডিজিটাল ডিভাইসের অভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। গ্রামে এর সংখ্যা ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অনলাইন ক্লাস আকর্ষণীয় না হওয়ায় ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী এতে অংশ নেয়নি। তবে আশা কথা হলো ৯৯ দশমিক ৩ শতাংশ শিক্ষার্থীই নিজ বাড়িতে পড়ালেখা করেছে। দূরশিক্ষণ ক্লাসে মাত্র ৩৭ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থীর তার পরিবারের সহায়তা পেয়েছে।

প্রতিবেদনের আট বিভাগের ৮টি জেলা ৭২টি উপজেলা থেকে শিক্ষার্থী-অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষক কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এনজিও কর্মীদের সঙ্গে কথা এ তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বস্তি থেকে প্রায় ৩ হাজারেরও বেশি ডাটা সংগ্রহ করা হয়। তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি ছিল।

গবেষণায় শিক্ষার ক্ষতি পোষাতে বেশকিছু সুপারিশ করা হয়। এরমধ্যে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত, পিইসি, জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা অন্যতম। এছাড়াও সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে অন্যান্য পাবলিক পরীক্ষাগুলোর নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়।

প্রতিবেদনটি ইতোমধ্যে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় এটি গ্রহণ করেছে বলেও জানান গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী।

তিনি জানান, সম্প্রতি সরকারের শিক্ষা দুটি মন্ত্রণালয়ের কাছে এ প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হয়। সেখানে মন্ত্রণালয় সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক, প্রাথমিকের মহাপরিচালকসহ বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

এনএম/এমএইচএস