ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় অবস্থিত ভাসমান দোকান উচ্ছেদ অভিযানে প্রক্টরিয়াল টিমকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছাত্রলীগের নেতাদের বিরুদ্ধে বাধার অভিযোগ আনা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) সকাল থেকে এই উচ্ছেদ অভিযান চালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা। এ সময় শামসুন নাহার হলের সামনের দোকানগুলো উচ্ছেদ করতে গেলে বাধার শিকার হয়েছেন বলে জানান প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা।

প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা জানান, আমরা প্রক্টর স্যারের নির্দেশে ক্যাম্পাসে ভাসমান দোকান উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছি। অনেক জায়গায় আমাদের বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। শুনতে হচ্ছে, আমরাই নাকি এসব দোকান বসিয়েছি। শামসুন নাহার হলে দোকান তুলতে গেলে শামসুন নাহার হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জেসমিন শান্তার কথা বলে বাধা দেওয়া হয়।

যদিও পরে বিষয়টি জানাজানি হলে অন্যভাবে উপস্থাপন করেন প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা। তারা বলেন, দোকান তুলতে গেলে দোকানদাররা শান্তার সঙ্গে কথা বলতে বলেন। পরে আমরা তার সঙ্গে কথা বলে প্রশাসনের নির্দেশনার কথা জানাই।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেসমিন শান্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘এসব দোকান তো আমার না, দোকানগুলো হলের কল্যাণ সমিতির। আমি বাধা দেওয়া-না দেওয়ার কে? আমাকে প্রক্টরিয়াল টিমের একজন সদস্য ফোনে বিষয়টা জানিয়েছেন। আমি ওনাকে বললাম, ওরা দোকানগুলো অনেক আগে থেকেই চালাচ্ছে। আপনি দোকানিদের সঙ্গে কথা বলেন, প্রক্টর স্যারের সঙ্গে কথা বলেন, প্রক্টর স্যার নিজেও জানেন দোকানগুলো কল্যাণ সমিতির।’

তিনি আরও বলেন, ‘ক্যাম্পাস বন্ধ থাকার সময়ও এখানে দোকান ছিল। ওই সময় দোকানিরা জানিয়েছিলেন যে প্রক্টরিয়াল টিমই তাদের দোকান দিয়ে বসিয়েছেন। প্রক্টরিয়াল টিম ক্যাম্পাসের মধ্যে এসব করে বেড়ায়। এখন তারা নিজেদের গা বাঁচাতে উল্টো দোষারোপ করছে। 

জেসমিন শান্তা বলেন, প্রক্টরিয়াল টিমের ওই সদস্যকে আমি বলেছি, আপনাদের নামেই তো এখানে দোকান বসে, আপনারা কী অ্যাকশন নিচ্ছেন! ক্যাম্পাসে যখন শিক্ষার্থীরা ছিল না তখনও এখানে দোকান ছিল, ফাঁকা ছিল না। ওইসব দোকান কাদের ছিল!

এর আগেও স্যার এ এফ রহমান হলের দোকান উচ্ছেদ করতে গিয়ে ছাত্রলীগের হল সহ-সভাপতি হোসাইন মাহমুদ আপেলের বাধার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রক্টরিয়াল টিমের এক সদস্য। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত হল সহ-সভাপতি হোসাইন মাহমুদ আপেল।

অভিযোগের বিষয়ে মাহমুদ আপেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের হলের ভেতরে চায়ের দোকান নেই। বাইরে দুইটা দোকান অনেক আগ থেকেই আছে। প্রক্টরিয়াল টিমের একজন সদস্য এসে দোকানদারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছিল। পরে বিষয়টি আমি সমাধান করে দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এ এফ রহমান হলের ভেতর কোনো দোকান নেই। তারপরও প্রভোস্ট স্যারসহ সবাই চাইলে দোকান বন্ধ হয়ে যাবে। টিএসসিতে দোকান থাকবে, আর আমরা চা খেতে চাইলে যেতে হবে নীলক্ষেত। এটা তো আমাদের প্রতি অবিচার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের চলমান কাজের অংশ হিসেবে এই উচ্ছেদ অভিযান চলছে। ক্যাম্পাসে কোনো ভাসমান দোকান থাকতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে আমরা কারও বাধা তোয়াক্কা করব না।

এইচআর/ওএফ