করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট শিক্ষা সংকট নিরসনে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর তাগিদ দিয়েছেন  বক্তারা।

শনিবার (১৩ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুনীর চৌধুরী অডিটোরিয়ামে ‘করোনাকালে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষার সংকট এবং রাষ্ট্রের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে এ তাগিদ দেন বক্তারা। সেমিনারটি আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।

সংগঠনের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক দীপক শীলের সঞ্চালনায় সেমিনারে আলোচনা করেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এ. এন. রাশেদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম. এম. আকাশ, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্টের প্রোগ্রাম প্রধান সমীর রঞ্জন নাথ, বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আকমল হোসেন।

সেমিনারে অধ্যাপক এম. এম. আকাশ বলেন, করোনাকালে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে গেছে। অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থার অব্যবস্থাপনা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। এ করোনাকালে বাল্যবিয়ের মতো ঘটনা ছাড়াও অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে অনেক স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের স্কুল ছাড়িয়ে মাদরাসায় দেওয়া হয়েছে। মানসম্মত ও গোছালো অনলাইন কন্টেন্ট তৈরি জরুরি। সেইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বৃত্তি প্রদান জরুরি। অনলাইন সংক্রান্ত দাবি এখন সময়ের দাবি। ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে এ সংকট নিরসন শুরু হোক।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফেরাতে উপবৃত্তির সংখ্যা বৃদ্ধি ও মিড-ডে মিল চালু করার দাবিতে আন্দোলন জরুরি। আমরা দেখেছি শিক্ষা খাতে প্রণোদনা না দিয়ে গার্মেন্টস খাতে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা মানেননি ব্যবসায়ীরা। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি একীভূত করে একটি ব্লক ছুটি ঘোষণা করার দাবি জানাই। আমরা শুধু প্রসার চাই না মানসম্মত শিক্ষাও চাই।

অধ্যাপক এ. এন. রাশেদা বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। আমরা স্লোগান দিয়েছিলাম কেউ খাবে তো কেউ খাবে না তা হবে না তা হবে না। এর কারণ ছিল সাম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। আমরা যাই করি না কেন প্রথমেই শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। কেননা পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। ৩০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন শিক্ষক নিশ্চিত করতে হবে। ৯০ দশক থেকে শিক্ষা ও শিক্ষক সংকট চলছে।

তিনি আরও বলেন, মানসম্মত শিক্ষক থাকলেও শিক্ষকদের যথোপযুক্ত বেতন দেওয়া হয় না। ইউনেস্কোর সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষকের বেতন হওয়া উচিত। শিক্ষকদের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা লুটপাট করা হয়। বছরের পর বছর লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা ধ্বংস ও লুটপাট করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের যথাযথভাবে শিক্ষা না দিয়ে পরের ক্লাসে উঠানোর ফল ভয়াবহ হতে পারে। প্রতিটি উপজেলায় আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা করা জরুরি। শিক্ষাকে বেসরকারিকরণের ফলে শিক্ষাখাতে ক্ষতি ছাড়া বিন্দুমাত্র লাভ হয়নি।

এইচআর/এসকেডি