করোনা মহামারির কারণে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা বাতিল হওয়ায় ফরম পূরণ বাবদ আদায় করা অর্থের অব্যয়িত অংশ ফেরত দেওয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ২০২০ সালের এইচএসসির ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা না হওয়ায় অব্যয়িত অর্থ ফেরত দেওয়া হবে।

শনিবার (৩০ জানুয়ারি) শিক্ষামন্ত্রীর এমন নির্দেশনার একদিন পরই অব্যয়িত অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ জারি করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এ নির্দেশনা অন্যান্য বোর্ডের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

রোববার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম আমিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বোর্ড নির্ধারিত ফি থেকে পত্রপ্রতি ৩০ টাকা এবং ব্যবহারিক বিষয়ের ক্ষেত্রে পত্রপ্রতি আরও ১০ টাকা শিক্ষাবোর্ড থেকে ফেরত দেওয়া হবে। এছাড়া পরীক্ষার্থী প্রতি ২০০ টাকা করে এবং আইসিটি বিষয়ক পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত আরও ২৫ টাকা ফেরত দেওয়া হবে।  

আইসিটি ছাড়া সব ব্যবহারিক বিষয়ের ক্ষেত্রে পত্রপ্রতি অতিরিক্ত ৪৫ টাকা করে ফেরত দেওয়া হবে। পরীক্ষার্থী কেন্দ্র ফি বাবদ ব্যয় না হওয়া অর্থ প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া হবে। সে হিসেবে একজন শিক্ষার্থী কত টাকা ফেরত পাবে ঢাকা পোস্টকে তার ব্যাখ্যা দিয়েছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস।  

একজন শিক্ষার্থী কত টাকা ফেরত পাবেন
শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাখার এক কর্মকর্তা টাকা ফেরতের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, বিজ্ঞান বিভাগের নিয়মিত একজন শিক্ষার্থী সর্বমোট ১ হাজার ৬৫ টাকা ফেরত পাবেন। এর মধ্যে শিক্ষাবোর্ড দেবে ৪৮০ টাকা, কেন্দ্রে দেবে ২২৫ টাকা। আট বিষয়ের ব্যবহারিকে ৪৫ টাকা করে মোট ৩৬০ টাকা। মানবিক ও ব্যবসা শিক্ষা শাখায় একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী পাবেন মোট ৬২৫ টাকা।

বিভাগভিত্তিক ব্যাখ্যা দিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, এইচএসসির তিনটি বিভাগে মোট ১৩টি বিষয়ে পরীক্ষা হয়। প্রতিটি পত্রের জন্য বোর্ড যে টাকা নিয়েছে সেখান থেকে প্রতিটি পত্রে ৩০ টাকা করে ফেরত দেবে শিক্ষাবোর্ড। এতে ১৩টি বিষয়ে মোট ফেরত পাবে ৩৯০ টাকা। এর সঙ্গে বিজ্ঞান বিভাগে ৯ বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা হয়। প্রতিটি পত্রে ১০ টাকা করে মোট ৯০ টাকা ফেরত দেওয়া হবে। বিজ্ঞান বিভাগে একজন শিক্ষার্থী শিক্ষাবোর্ড ফেরত পাবে ৪৮০ টাকা।

অন্যদিকে পরীক্ষা কেন্দ্র ১৩টি বিষয়ে মোট ২০০ টাকা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে ব্যবহারিক খাতা থেকে ২৫ টাকা ফেরত দেবে। এখানে ফেরত পাবে ২২৫ টাকা। ব্যবহারিকে ৪৫ টাকা করে মোট ৩৬০ টাকা। সব মিলিয়ে বিজ্ঞানের একজন শিক্ষার্থী সর্বমোট ১ হাজার ৬৫ টাকা ফেরত পাবে।

মানবিক ও ব্যবসা বিভাগের নিয়মিত একজন শিক্ষার্থী ১৩টি বিষয়ে মোট ৩৯০, পরীক্ষা কেন্দ্র ২০০ টাকার সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারিক বিষয়ে শিক্ষাবোর্ড ১০ টাকা এবং কেন্দ্র ২৫ টাকা দেবে। মোট ৬১৫ টাকা পাবেন।

তবে অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী যেক’টি বিষয় লিখিত ও ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন সে অনুপাতে টাকা ফেরত পাবে।

এ ব্যাপারে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এম এম আমিরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, অব্যয়িত অর্থ একেক শিক্ষার্থীর একেক রকম। বিজ্ঞান বিভাগে ফেরত অর্থের পরিমাণ বেশি, অন্যদিকে মানবিক ও ব্যবসা শিক্ষায় কম। নিয়মিত-অনিয়মিত ও মানোন্নয়নের শিক্ষার্থীদের ফি একেক রকম। তাই এ টাকা ফেরত দিতে গিয়ে কোনো ঝামেলা না হয় সেজন্য একটি নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। তারপরও কোনো কেন্দ্রের বুঝতে সমস্যা হলে সংশ্লিষ্ট বোর্ডে যোগাযোগ করতে পারে।   


এনএম/জেডএস