রাজধানীর রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে মাধ্যমিক পর্যায়ের একটি শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী করোনা পজিটিভ হয়েছেন। তারা শনাক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত সশরীরে ক্লাস করেছেন।

সংক্রমণ ঠেকাতে ওই দুই শিক্ষার্থীর সংস্পর্শে আসা অন্যদের আইসোলেশনে নেওয়া বা অন্য কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে অসন্তোষ জানিয়েছেন ওই দুই শিক্ষার্থীর সহপাঠী ও তাদের অভিভাবকরা। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষার্থীদের সবার টিকা নেওয়া আছে। দু-একজনের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না।

উপসর্গ দেখা দেওয়ায় গত শনিবার করোনা পরীক্ষা করান এক শিক্ষার্থী। সোমবার ক্লাস চলাকালে তিনি পজিটিভ হওয়ার খবর পান। এর পরপরই তিনি হোম আইসোলেশনে চলে যান। একই ক্লাসের আরেক শিক্ষার্থীর মঙ্গলবার করোনা পজিটিভ আসে। কিন্তু এরপরও একই কক্ষে ওই নির্দিষ্ট শ্রেণির ক্লাস চলছে। 

সহপাঠীরা জানান, উপসর্গ দেখা দেওয়ায় গত শনিবার করোনা পরীক্ষা করান এক শিক্ষার্থী। সোমবার ক্লাস চলাকালে তিনি পজিটিভ হওয়ার খবর পান। এর পরপরই তিনি হোম আইসোলেশনে চলে যান। একই ক্লাসের আরেক শিক্ষার্থীর মঙ্গলবার করোনা পজিটিভ আসে। কিন্তু এরপরও একই কক্ষে ওই নির্দিষ্ট শ্রেণির ক্লাস চলছে। এতে অন্য শিক্ষার্থীরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্কে আছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই দুজনের এক সহপাঠী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। কারণ, উপসর্গ থাকা অবস্থায় তাদের সংস্পর্শে গিয়েছি। এমনকি সে যেদিন করোনার রিপোর্ট পায়, সেদিনও আমাদের সঙ্গে ক্লাস করেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের করোনা শনাক্তের বিষয়টি আমাদের কাছে লুকিয়েছে।’ 

আরেক সহপাঠী বলেন, ‘শিক্ষকরা আমাদের কিছুই জানাননি। আমার মনে হয়, শিক্ষকরা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা ভয়ে আছি। আমার নিজেরও ঠান্ডা-কাশি শুরু হয়েছে।’

করোনা শনাক্ত হওয়া দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে ঢাকা পোস্ট। একটি মাধ্যমে যোগাযোগ করলে তারা কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তারা জানিয়েছেন, কথা বললে তারা শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন।

নাম প্রকাশ না করে ওই ক্লাসের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, ‘দুই বন্ধুর করোনা শনাক্ত হওয়ার খবরে আমার সন্তান বিচলিত হয়ে পড়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির কড়া নিয়মের কারণে সে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই স্কুলে যাচ্ছে।’

আরেক অভিভাবক বলেন, ‘স্কুলে না গেলে শিক্ষকরা নম্বর কাটবেন, অনুপস্থিত দেখাবেন— এমন চিন্তা করে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে যাচ্ছে। কিন্তু এটি কোনোভাবেই উচিত নয়। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা আগে চিন্তা করতে হবে। আমরা আশা করছি, স্কুল কর্তৃপক্ষ দ্রুতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’

এ বিষয়ে জানতে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তায়েফ উল হকের মুঠোফোনে টানা কয়েকবার কল দিয়ে এবং ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

তবে প্রতিষ্ঠানটির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আক্তার হোসাইন কথা বলেন ঢাকা পোস্টের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘দুজন নয়, এক শিক্ষার্থী করোনা আক্রান্ত হয়েছে। যখনই কেউ আক্রান্ত হচ্ছে, সে আর স্কুলে আসছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলি এবং যতটা সম্ভব নিরাপত্তা বজায় রাখার চেষ্টা করি। আমাদের শ্রেণিকক্ষে একটি বেঞ্চে তিন ফুটেরও বেশি দূরত্ব থাকে। যেহেতু সবার টিকা নেওয়া আছে, সে কারণে ওমিক্রনের প্রভাব ততটা পড়ছে না। আশা করি, এ ক্ষেত্রেও কোনো সমস্যা হবে না।’

এএজে/আরএইচ/জেএস