শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণসহ আট দফা দাবি পূরণের লক্ষ্যে সারাদেশে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেবে স্বাধীনতা শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশন।

বুধবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান স্বাধীনতা শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু।

তিনি বলেন, আট দফা দাবি আদায়ে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সারাদেশের জেলা সদরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।

লিখিত বক্তব্যে অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু বলেন, শিক্ষায় করোনার ক্ষতিপূরণ, বিদ্যমান বৈষম্যের অবসান এবং শিক্ষাকে বিশ্বায়ন উপযোগী ও টেকসই ভিত্তি দেওয়ার লক্ষ্যে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের জন্য আসন্ন বাজেটে (২০২২-২৩ অর্থবছর) শিক্ষা খাতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দের দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, যোগাযোগসহ বাংলাদেশ আজ সবক্ষেত্রে অকল্পনীয় উন্নতি করেছে। অতিদ্রুত অগ্রসরমান বাংলাদেশকে বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে হলে বিশ্বমানের শিক্ষা অপরিহার্য। সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলা বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে হলে এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করার কোনো বিকল্প নেই। আমরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এই মহৎ কাজটি একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব। সেজন্যই শিক্ষাকে একটি টেকসই ভিতের ওপর দাঁড় করানোর লক্ষ্যে অবিলম্বে আমাদের দাবিগুলো পূরণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।

স্বাধীনতা শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের দাবিগুলো হলো

১. মুজিববর্ষে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের ঘোষণার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন একটি সর্বজনীন বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।

২. অতিদ্রুত বিভিন্ন বোর্ড কর্তৃক যথাযথ নিয়মে এফিলিয়েশনপ্রাপ্ত সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি (স্বতন্ত্র এবতেদায়ি, অনার্স/মাস্টার্সসহ) প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্তির ব্যবস্থা গ্রহণ।

৩. আসন্ন ঈদের আগেই পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে পর্যায়ক্রমে বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা সরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের সমপরিমাণ করতে হবে।

৪. সরকারের স্বদিচ্ছা বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষা প্রশাসন, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, মাউশিসহ বিভিন্ন অধিদপ্তর শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীদের অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

৫. করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক প্রণোদনা/বিশেষ বৃত্তি বা অনুদানের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সব শিক্ষার্থীর জন্য বিনামূল্যে ডিভাইস, খাতা কলমসহ অন্যান্য শিক্ষা সামগ্রী দেওয়া এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে (স্কুল, মাদ্রাসা, কারিগরি) শিক্ষার্থীদের সরকারি উদ্যোগে দুপুরের টিফিনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৬. শূন্যপদের বিপরীতে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলির ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে।

৭. অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারীদের দুর্দশা লাঘবে শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর বোর্ডের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।

৮. ব্যবস্থাপনা কমিটিতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে শিক্ষাবান্ধব ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত এবং স্কুল পর্যায়ে ন্যূনতম ডিগ্রি পাস ও কলেজ পর্যায়ে ন্যূনতম মাস্টার্স পাস স্বচ্ছ ইমেজ সম্পন্ন ব্যক্তিদের মনোনয়ন করতে হবে।

এএজে/জেডএস