২০০৮ সালে চ্যানেল আইয়ের ‘ক্ষুদে গানরাজ’ প্রতিযোগিতার প্রথম আসরে গানে-হাসিতে মুগ্ধ করেছিলেন এক শিশু। তার নাম সদ্য খান। সেই আয়োজনে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছিলেন তিনি। প্রায় ১৪ বছর পর সেই শিশু এখন ২৫ বছরের তরুণ। শারীরিক গড়ন থেকে শুরু করে তার জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই এসেছে পরিবর্তন। বাংলার পাশাপাশি হিন্দি গান করে এখন ভারতেও পরিচিতি পাচ্ছেন।

২০০৯ সালে ‘ইলশেগুঁড়ি’ অ্যালবামে প্রকাশ পায় সদ্যর প্রথম মৌলিক গান ‘মওলা ও মওলারে’। এরপর দীর্ঘসময় পড়াশোনা, ব্যান্ড গড়া ও ভাঙা এবং হিন্দি গানের চর্চায় ব্যস্ত ছিলেন।

প্রথম মৌলিকের ৮ বছর পর ২০১৭ সালে শর্টফিল্ম ‘মায়াবী’তে প্রকাশ পায় সদ্য খানের দ্বিতীয় মৌলিক গান ‘এত মায়া’। ২০১৯ সালে মিউজিকাল ফিল্ম আকারে আসে তার গাওয়া ‘মন পাখি’। গানগুলোর জন্য কম-বেশি পরিচিতজনদের বাহবাও পেয়েছেন এই গায়ক-সংগীত পরিচালক।

তবে সদ্য খান বেশি সাফল্য পেয়েছেন হিন্দি গান কভার করে। ২০১৫ সালে বন্ধুদের নিয়ে ‘রহস্যময়’ নামে একটি ব্যান্ড গড়েন সদ্য। কিন্তু কিশোরদের সেই ব্যান্ড ভেঙে যায় উঠে না দাঁড়াতেই। ব্যান্ডের নামে সে সময় ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলেছিলেন সদ্য। ব্যান্ড ভেঙে যাওয়ার পর চ্যানেলটিকে ‘সদ্য খান’ নামে রূপান্তর করে একের পর এক হিন্দি গানের কভার প্রকাশ করতে থাকেন।

এই ‘ক্ষুদে গানরাজ’ তারকা জানান, এ পর্যন্ত ইউটিউবে প্রায় ১১০টি গানের কভার প্রকাশ করেছেন তিনি। যার মধ্যে ১৫-২০টি বাংলা। বাকি সবগুলোই হিন্দি গানের কভার। আর এই গানগুলোর সুবাধে ভারতেও তার ভক্তগোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। ভারতীয় ভক্তদের বিভিন্ন গ্রুপে বাংলাদেশের সদ্যর গাওয়া এসব গান নিয়ে মাতামাতি হয়। চলে লাইক-কমেন্টের ছড়াছড়ি। ফলে হিন্দি গানের প্রতি আরও আগ্রহী হয়ে ওঠেন এই শিল্পী। ‘এক পাল’ শিরোনামে একটি মৌলিক হিন্দি গান করেও ভারতীয় শ্রোতাদের মন কেড়েছেন বাংলাদেশের এই গায়ক। ইউটিউবে তার চ্যানেল ‘সদ্য খান’ এরইমধ্যে পেরিয়ে গেছে ৩ লাখ সাবসক্রাইবার।

হিন্দি গানের প্রতি এত আগ্রহ কীভাবে তৈরি হলো? জানতে চাইলে সদ্য খান বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই হিন্দু কার্টুন, গানসহ বিভিন্ন জিনিস দেখে-শুনে হিন্দি ভাষাটা অটোমেটিকালি আমার আয়ত্বে চলে আসে। বিভিন্ন আড্ডা-অনুষ্ঠানে বাংলার পাশাপাশি হিন্দি গান করলে সবার বাহবা পেতাম। সবাই বলত আমার হিন্দি উচ্চারণ, গায়কী বেশ ভালো। ইউটিউবে হিন্দি গানের কভার প্রকাশ করে বেশ রেসপন্স পেতে থাকি। ফলে ভারতেও আমার ফ্যানবেজ তৈরি হয়। এটা যদি ধরে রাখি তাহলে ভারতে আমার জায়গাটা আরও শক্ত হবে আশা করি। সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।’

এই গায়ক আরও বলেন, ‘গান করতে করতে ভারতীয় অনেক শ্রোতা-শিল্পীর সঙ্গে আমার যোগাযোগ তৈরি হয়েছে। ভারতে কিন্তু এখন পাকিস্তানি শিল্পীরা নিষিদ্ধ। আমি চাই এই সুযোগে সেখানে নিজের জায়গাটাকে আরও বড় করতে। এভাবে একদিন বলিউডেও পৌঁছে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি!’

নিজের ভাষা বাংলাতেও নিয়মিত গান প্রকাশ করতে চান সদ্য। বলেন, ‘হিন্দিতে যতই আমার আগ্রহ থাকুক বাংলা কিন্তু সবসময় হৃদয়েই থাকবে। নিজের ভাষাতেও নিয়মিত প্রকাশ করতে চাই। এক্ষত্রে শ্রোতা এবং প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভালোবাসা ও সমর্থন আমার প্রয়োজন। আমার বয়স, ভয়েস দুটিই এখন পরিণত। নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সবচেয়ে উত্তম সময় এটা।’

আরআইজে