ডালিয়া আক্তার ডলি বরিশালের মেয়ে। ১১ বছর বয়সে বাবা বিয়ে ঠিক করলে স্কুল থেকে পাওয়া বৃত্তির টাকা আর কিছু জামাকাপড় নিয়ে পাড়ি জমায় ঢাকায়। চাচাতো বোনের সহযোগিতায় কাজের ব্যবস্থা হয় একটি গার্মেন্টেসে। প্রথমে নম্বর মেলানোর কাজ করতেন। পরে কাজ নেন অপারেটরের। এভাবেই বিভিন্ন সময় কাজ বদলে এগিয়ে যেতে থাকেন। একসময় ডালিয়াসহ কয়েকজন সিদ্ধান্ত নেন ইউনিয়ন করবেন। কিন্তু সে পথ সহজ ছিল না। নানা বাধা ও হুমকি আসে বন্ধুর সে পথে। তবুও এগিয়ে যান ডালিয়া। একসময় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্টও হন।

ডালিয়ার জীবনেরই নানান সত্যি ঘটনায় অনুপ্রেরণায় তৈরি হয়েছে সিনেমা ‘শিমু’। শুক্রবার রাজধানীর এক হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করেন এই চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। সেখানে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেত্রী ডালিয়া আক্তার ডলি ও পরিচালক রুবাইয়াত হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।

আগামী ১১ মার্চ সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে। প্রথমদিন থেকেই এটি প্রদর্শিত হবে স্টার সিনেপ্লেক্স, যমুনা ব্লকবাস্টার, নারায়ণগঞ্জের সিনেস্কোপ, চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিনসহ সাভার, গাজীপুর এবং রাজশাহীর সিনেমা হলে।

রুবাইয়াত হোসেন জানান, বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিয়ে ৭টি পুরস্কার পেয়েছে ‘শিমু’। এর ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয় টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে। এরপর প্রদর্শিত হয় বিএফআই লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সমাদৃত ও পুরস্কৃত হয়েছে সিনেমাটি। এছাড়া ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ফ্রান্স, ডেনমার্ক, কানাডা ও পর্তুগালের বিভিন্ন সিনেমা হলে বাণিজ্যিকভাবে মুক্তি পায় এটি। ২০২০ আমেরিকার বিভিন্ন হলে প্রদর্শনের পর এটি বাণিজ্যিকভাবে দেখানো হয় মেক্সিকো, চীন, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক ও জার্মানীর সিনেমা হলে। বাংলাদেশে মুক্তির পরপরই আগামী এপ্রিল মুক্তি পেতে যাচ্ছে জাপানের বিভিন্ন সিনেমা হলে। 

৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে উপলক্ষ করে দেশে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি। এর মূল কুশলীদের অধিকাংশই নারী। চিত্রগ্রহণে সাবিন ল্যাঞ্চেলিন, শব্দগ্রহণে এলিশা আলবার্ট এবং শিল্প নির্দেশনায় জোনাকি ভট্টাচার্য্যের নাম উল্লেখযোগ্য। 

সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন-রিকিতা নন্দিনী শিমু, নভেরা রহমান, দীপান্বিতা মার্টিন, পারভীন পারু, মায়াবি মায়া, মোস্তফা মনোয়ার, শতাব্দী ওয়াদুদ, জয়রাজ, মোমেনা চৌধুরী, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, সামিনা লুৎফা প্রমুখ। দুটি অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিতা চৌধুরী ও ভারতের শাহানা গোস্বামী।

বাংলাদেশের খনা টকিজ ও ফ্রান্সের লা ফিল্মস দ্য এপ্রেস-মিডির ব্যানারে নির্মিত সিনেমাটির প্রযোজক ফ্রঁসোয়া দক্তেমা ও আশিক মোস্তফা এবং সহ-প্রযোজক পিটার হিলডাল, পেদ্রো বোর্হেস, আদনান ইমতিয়াজ আহমেদ ও রুবাইয়াত হোসেন। পরিবেশনা ও আন্তর্জাতিক বিক্রয় প্রতিনিধি ফ্রান্সের পিরামিড ফিল্মস।

আরআইজে