কলকাতার সিনেমা যেন আমূল বদলে গেল। এক দশক আগেও যেখানে মারকাট, অবাস্তব গল্পের কমার্শিয়াল সিনেমা রাজ করত, সেখানেই এখন গল্পের জয়জয়কার। এখন টলিউডে কথিত বাণিজ্যিক সিনেমা নয়, গল্পনির্ভর সিনেমাই সাফল্য পাচ্ছে বেশি। এমনকি রেকর্ড পরিমাণ আয় করছে।

সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘অপরাজিত’ ও ‘বেলাশুরু’ সিনেমা দুটি এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। করোনা মহামারির পর রেকর্ড পরিমাণ ব্যবসা করছে সিনেমাগুলো। এর মধ্যে এগিয়ে আছে ‘অপরাজিত’। প্রথম তিনদিনেই এর আয় ছিল ১ কোটি ৮৬ লাখ রুপি। অন্যদিকে ‘বেলাশুরু’ প্রথম তিনদিনে আয় করেছে ১ কোটি ৪১ লাখ রুপি।

করোনায় থমকে যাওয়া টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে প্রাণ ফিরিয়ে আনে দেবের ‘টনিক’, যীশু সেনগুপ্তের ‘বাবা বেবি ও’, প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি অভিনীত ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’ সিনেমাগুলো। প্রত্যেকটি সিনেমাই গল্পনির্ভর এবং প্রশংসিত। বক্স অফিসেও সাফল্য পায়। সেই পথে আরও এগিয়ে গেলো শিবপ্রসাদ-নন্দিতা পরিচালিত ‘বেলাশুরু’ ও অনিক দত্ত পরিচালিত ‘অপরাজিত’।

গত ২০ মে মুক্তি পেয়েছে ‘বেলাশুরু’। এতে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও স্বাতীলেখা। তারা দু’জনেই গত বছর মারা গেছেন। ফলে এটিই তাদের শেষ সিনেমা। প্রথমদিনে সিনেমাটি আয় করে ৩৫ লাখ রুপি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে সেটা আরও যথাক্রমে ৪৫ লাখ ও ৬১ লাখ হয়। ফলে তিনদিন শেষে এর আয় ১ কোটি ৪১ কোটি।

অন্যদিকে সত্যজিৎ রায়ের জীবন অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ‘অপরাজিত’। এতে সত্যজিতের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন জিতু কামাল। সর্বমহলে প্রশংসিত এই সিনেমার প্রথম দিনের আয় ছিল মাত্র ৫ লাখ রুপি। কিন্তু দ্বিতীয় দিন থেকেই চমকপ্রদভাবে বেড়ে চলেছে এর আয়। দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে সিনেমাটির আয় প্রায় আড়াই কোটি রুপি।

এই সিনেমার পরিবেশক শতদীপ সাহা বলেন, ‘বাংলা সিনেমাকে বাঁচান বলে আলাদা করে কোনও আন্দোলনের দরকার নেই। সিনেমার কন্টেন্ট যদি ভালো হয়, দর্শক এমনিই প্রেক্ষাগৃহে আসবেন। বর্তমানে ৯০ শতাংশ মাল্টিপ্লেক্সে বাংলা সিনেমা দেখানো হচ্ছে।’

কেআই