কান ফিল্ম ফেস্টিভালে এক ভারতীয় বাঙালির তৈরি তথ্যচিত্র পুরস্কার জিতল। ছবির নাম, ‘অল দ্যাট ব্রিদস’। একমাত্র ভারতীয় ছবি হিসেবে ২০২২ সালের ‘ল’ওয়েল ডি‘অর’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে এ তথ্যচিত্র। যার নির্মাতা জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের শৌনক সেন। ২০১৫ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবের সহযোগিতায় ফরাসি লেখকদের একটি গোষ্ঠী ‘ল’ওয়েল ডি‘অর’ পুরস্কার দেওয়ার রীতি চালু করেছে। যার আর এক নাম, ‘গোল্ডেন আই অ্যাওয়ার্ড’। সেই সম্মানই চলতি বছর শৌনকের ঝুলিতে।

দিল্লির প্রত্যন্ত গ্রাম ওয়াজিরাবাদে একটি পরিত্যক্ত বেসমেন্টে থাকেন দুই ভাইবোন। মুহাম্মদ সৌদ ও নাদিম শাহজাদ। তাদের জীবন ঘিরেই এগোয় ছবির কাহিনী। তবে সব চেয়ে আকর্ষণীয় মুহম্মদ ও নাদিমের অদ্ভুত নেশা। আহত পাখি, বিশেষত কালো চিল উদ্ধার করে শুশ্রূষা করেন তারা। তারই সূত্রে গল্প মোড় নেয় অন্য খাতে।

কান-এ বিশেষ প্রদর্শন বিভাগে ‘অল দ্যাট ব্রিদস’-এর প্রিমিয়ার হয়েছিল। ৯০ মিনিটের তথ্যচিত্র সেখানেই বিচারকদের মন জয় করে নেয়। পোল্যান্ডের চিত্র পরিচালক অ্যাগনিয়েস্কা হল্যান্ড, মরক্কোর লেখক তথা নির্দেশক হিশাম ফালা ছাড়াও বিচারকমণ্ডলীতে ছিলেন খ্যাতনামী সাহিত্যিক, অভিনেতা ও সাংবাদিকরা।

শৌনকের এই তথ্যচিত্রকেই কেন সেরা হিসাবে বেছে নেওয়া হলো? ‘ল’ওয়েল ডি‘অর’-এর ওয়েবসাইটে এক বিচারক লিখেছেন, ‘এ পুরস্কার এমন এক ছবিকে দেওয়া হয়েছে যা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে এই ধ্বংসাত্মক দুনিয়ায় প্রতিটি জীবনের মূল্য রয়েছে এবং প্রতিটি ছোট পদক্ষেপই গুরুত্বপূর্ণ। ক্যামেরা হাতে তুলে নিয়েও আপনি একটি পাখির জীবন বাঁচাতে পারেন।’ 

আর্থিক মূল্যে এই পুরস্কারের সঙ্গে শৌনকের ঝুলিতে এসেছে পাঁচ হাজার ইউরো। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৪ লাখ ১৬ হাজার রুপি।

দিল্লিবাসী শৌনকের এটি দ্বিতীয় ছবি। ২০১৫ সালে ‘সিটিস অব স্লিপ’ নামে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সাবেক ছাত্র। কান-এ মঞ্চজয়ের আগে আরও কয়েকটি বিখ্যাত চলচ্চিত্র উৎসবে জিতে এসেছে শৌনকের ছবি। তার পর ৭৫তম কান চলচ্চিত্র উৎসবেও বাজিমাত। সব মিলিয়ে খুশির পালক বাঙালির মুকুটে!

ওএফ