মিস ওয়ার্ল্ড, মিস ইউনিভার্স ইত্যাদি বহু প্রতিযোগিতা রয়েছে বিশ্বজুড়ে। যেগুলোতে সুন্দরী নারীদের বাছাই করে পুরস্কৃত করা হয়। আবার স্থূলকায় নারীদের জন্যও সুন্দরী প্রতিযোগিতা দেখা যায় বিভিন্ন দেশে।

এবার বাংলাদেশেও শুরু হলো ব্যতিক্রম এই প্রতিযোগিতা। নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিস অ্যান্ড মিসেস প্লাস বাংলাদেশ’। এতে বিশেষত স্থূলকায় বা সহজ ভাষায় মোটা নারীরা অংশ নিচ্ছেন। রিয়েল হিরোজ এক্স প্রো অ্যান্ড কমিউনিকেশনসের উদ্যোগে শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতাটি।

অডিশন ও গ্রুমিং পর্ব শেষে বর্তমানে প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনাল সিলেকশন চলছে বলে জানা গেছে। ফাইনালে বিজয়ীকে ঢাকা টু দুবাই ট্যুরের ব্যবস্থা করা হবে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন কোম্পানির পক্ষ থেকে উপহারসামগ্রী দেয়া হবে। এছাড়া অভিনয়ের সুযোগসহ র‌্যাম্পে হাঁটার সুযোগ পাবেন বিজয়ীরা।

‘মিস অ্যান্ড মিসেস প্লাস বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে অডিশন দিয়েছেন ৩০০ জন। তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে ৭০ জনকে পরবর্তী রাউন্ডে আনা হয়। সেই অডিশনে বিচারক হিসেবে ছিলেন চিত্রনায়িকা রোজিনা, নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী, চিত্রনায়ক ইমনসহ আরও কয়েকজন।

প্রতিযোগিতার অডিশনে বিচারকরা

স্থূলকায় নারীদের প্রতিনিয়ত নানান কটাক্ষ, সমালোচনা সহ্য করতে হয়। শুধুমাত্র শারীরিক গঠনের কারণে তাদেরকে প্রায়শই হেয় করেন অনেকে। অথচ তাদের মধ্যেও থাকে প্রতিভা। কিন্তু সেটা প্ল্যাটফর্মের অভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেন না। তাই ‘মিস অ্যান্ড মিসেস প্লাস বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া স্থূলকায় নারীরা প্রত্যেকেই ভীষণ উচ্ছ্বসিত।

আয়োজক প্রতিষ্ঠানের প্রধান মালা খন্দকার বলেন, ‘আমাদের প্রথম স্লোগান- ‘বডি শেমিং বন্ধ করো’। সুতরাং প্রতিযোগীদের মধ্যে কে কতটা ফর্সা, কতটা মোটা, কার উচ্চতা কত, এসব গুরুত্ব দিচ্ছি না। আন্তর্জাতিক কিছু নিয়ম অনুযায়ী আমরা সিলেকশন করছি। তাদের মধ্যে আমরা নাচ, গান, আবৃত্তি, ক্যাটওয়াক ইত্যাদি বিষয়গুলো বিচার করছি। আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি প্রতিযোগীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর দিকে। এখান থেকে বের হওয়ার পর তারা যেন সুন্দরভাবে, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জীবনযাপন করতে পারে।’

আয়োজক আরও জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে পুরুষদের নিয়েও এরকম প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।

অংশ নেওয়া এক প্রতিযোগী বলেন, ‘আমি ব্র্যান্ড প্রমোটার হিসেবে কাজ করি। কিন্তু যখনই কোনো লাইভে অংশ নেই, তখনই শুনতে হয় এত মোটা একটা মেয়েকে দিয়ে কেন লাইভ করানো হচ্ছে! এই প্রতিযোগিতায় এসে আমার আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গেছে। এমন পোশাক আমি কখনো পরিনি। কিন্তু এখন পরে সাবলীলভাবে কথা বলছি, এটাই পরিবর্তন।’

আরেক প্রতিযোগীর ভাষ্য, ‘আমি বিশ্বাস করি, শরীরের ওজন কাউকে বিচারের মাপকাঠি হতে পারে না। এই প্রতিযোগিতায় এসে আমি অনেক কিছু শিখেছি। তবে সবচেয়ে বেশি শিখেছি আত্মবিশ্বাস ও ইতিবাচক মানসিকতা।’

কেআই