খুলনার খালিশপুর চিত্রালী সিনেমা হল গেটে জটলা। সামনে এগিয়ে যেতে দেখা যায় হলে আসা দর্শকরা সেলফি তুলছেন। কিছুক্ষণ পর দর্শক ভিড়ে দেখা মেলে চিত্র নায়িকা পূজা চেরির। তিনি হলে আসা দর্শকদের সঙ্গে তুলছেন সেলফি।

খুলনার দর্শকদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে মুগ্ধ পূজা। দর্শকরাও প্রথমবারের মতো পূজা চেরিকে কাছে পেয়ে আনন্দিত। সোমবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চিত্রালী সিনেমা হলের প্রধান ফটকে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে। এই হলে চলছে পূজা চেরি অভিনীত ‘সাইকো’ সিনেমা। হল ভিজিটে পূজার সঙ্গে ছিলেন ছবির পরিচালক অনন্য মামুন।

অনন্য মামুনের ‘সাইকো’ সিনেমাটি এবার ঈদুল আজহায় মুক্তি পেয়েছে। ছবিটি খুলনার চিত্রালী ও শঙ্খ সিনেমা হলে চলছে। সিনেমাটির প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন রোশান ও পূজা চেরি।

‘সাইকো’ প্রযোজনা করছেন সেলেব্রেটি প্রডাকশন। রোশান-পূজা ছাড়াও অভিনয় করেছেন শহিদুজ্জামান সেলিম, রোজি সিদ্দিকী প্রমুখ। বাংলাদেশ ছাড়াও সিনেমাটির শুটিং হয়েছে নেপালে।

‘সাইকো’ সিনেমার নায়িকা পূজা চেরি ঢাকা পোস্টকে বলেন, খুলনা আমার হোম টাউন। এখানে আগেও এসেছি। তবে সিনেমা হল ভিজিটে প্রথম এসেছি। চিত্রালী হলে এসে খুবই ভালো লাগছে। আমি এখানে এসে এতোটা প্রত্যাশা করিনি। যেহেতু কোরবানির ঈদ, যে যার মতো ঈদ নিয়ে ব্যস্ত থাকবে এটা স্বাভাবিক। এই সময়ে দর্শক পাওয়া অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার। আমি এসে অবাক হয়েছি। সবাই এতো চাইছে, এতো ভালোভাবে গ্রহণ করেছে ‘সাইকো’ সিনেমাটিকে। এটাই আমাদের কাছে অনেক কিছু।

তিনি বলেন, আমি বেড়ে উঠেছি ঢাকায়, কিন্তু আমার বাবাতো খুলনায় জন্মগ্রহণ করেছে। বাবার বাড়ি মানে আমার বাড়ি। আমার দাদা দাদি সবাই এখানে থাকে। এর আগে আমি পূজার সময় আসতাম। এখন কাজের ব্যস্ততা বেড়েছে, তাই একটু কম আসা হয়। কিন্তু আগে আমি সবসময় আসতাম।

চিত্র নায়িকা পূজা চেরি বলেন, এখন যেহেতু হল ভিজিটে আসা একবার চালু হয়েছে, পরিকল্পনা রয়েছে আমার যতগুলো সিনেমা রিলিজ পাবে আমি খুলনায় আগে আসব। হলে দর্শক পেয়ে সকল আর্টিস্টের ভালো লাগে, সব ডিরেক্টরদের ভালো লাগে। এই ছবির বর্ণনা দিতে চাইছি না, দর্শকরা হলে আসুক ছবি দেখে কেমন লাগল সেটা আমাদেরকে বলুক।

প্রথমবারের মতো খুলনায় এসে খুবই আনন্দিত ছবির পরিচালক অনন্য মামুন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, খুলনা যে এত উন্নত শহর আমি জানতাম না। প্রথমবার এসেছি। দর্শক এবং পরিবেশ খুবই ভালো। এর আগে আমার অনেকগুলো ছবি এখানে চলেছে। সাকিব ভাইয়ের নবাব থেকে শুরু করে অনেকগুলো ছবি চলেছে। এই ছবিটাও দর্শক গ্রহণ করেছে ঈদের সময়, এজন্য আমি খুবই খুশি। সবাইকে ধন্যবাদ সাপোর্ট করার জন্য, আপনারা বেশি বেশি হলে আসবেন।

তিনি বলেন, সব ছবিই ভালো যাক এটাই আমার চাওয়া। তবে হ্যা, সব ছবির চেয়ে আমাদের ছবি এগিয়ে রয়েছে। এটা আমাদের কাছে বড় পাওয়া এবং অবশ্যই খুশির সংবাদ। খুলনার মানুষ অতিথি পরায়ন। সারাদিন আমরা খুলনায় ছিলাম, খুব ভালো লাগলো।

চিত্রালী সিনেমা হলের পরিচালক তপু খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমিও একজন মনে প্রাণে শিল্পী। আমার শিল্পসত্তার দিয়ে আজকে এই চিত্রালী সিনেমা হল। আমি যেমন বিনোদনমুখী মানুষ, তেমনই বিনোদন দিতে ও নিতে আমার ভালো লাগে। আজকে পূজা চেরি আমার হলে এসেছে, আমি খুবই এক্সাইটেড। বাংলাদেশে সিনেমা মুক্তির পর পূজা কোনো হলে যাননি, ফেসবুক লাইভে এসে চিত্রালী এবং শঙ্খ সিনেমা হলে আসবেন জানিয়েছেন। এটা দেখে দর্শকের উপচেপড়া ভিড়। হল হাউজ ফুল। আমি খুবই খুশি। এ রকম নায়ক-নায়িকারা যদি দর্শকের সামনে উপস্থিত হয়, উৎসাহ দেয় তাহলে দর্শক আরো অনুপ্রাণিত হবে।

তিনি বলেন, সিনামাটি অসম্ভব সুন্দর একটি গল্প। মামুন ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। তিনি নতুন নতুন গল্প নিয়ে আমাদের মাঝে আসেন। এটাও অন্যরকম। ‘সাইকো’ টিমকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 

সিনেমা দেখতে আসা রিজিয়া সুলতানা বলেন, পূজা চেরিকে প্রথমে জুস খাওয়ালো এটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। ইউনিক স্টাইল ছিল। পূজা চেরিকে আমার খুবই ভালো লাগে। পূজা চেরি আসবে আমি জানতাম না, দেখে পুরাই অবাক।

হল পরিচালকের মেয়ে তাহসিনা তানহা তুবা বলেন, পূজা চেরিকে সামনে থেকে দেখতে পেরেছি, ছবি তুলতে পেরেছি। খুবই ভালো লাগছে।

সিনেমা হলে আসা সাজ্জাদ মীর বলেন, ছবিটা আসলেই অসাধারণ। এবারের ঈদে তিনটা ছবি এসেছে। এরমধ্যে পরাণ আর সাইকো ছবি দুটি দেখেছি। সাইকো ছবিটি ভালো লেগেছে। পূজা বাংলাদেশের একজন সুপার স্টার নায়িকা। তার মন মানসিকতা অনেক ভালো। আমি জানতাম না সে আসবে এখানে। পোস্ট দিয়েছে আসবে আজ এখানে। তাই হুট করে চলে আসলাম। ছবিও দেখা হয়ে গেল।


মোহাম্মদ মিলন/এমএএস