বাংলা খেয়ালে কেন মনোযোগী হলেন কবীর সুমন— নিজেই শোনালেন সে গল্প। বাবা মৃত্যুর আগে বাংলা ভাষায় খেয়াল গান করতে বলেছিলেন। বাবার কথামতো খেয়ালে মন দিয়েছেন তিনি। শুধু মন নয়, বাংলা ভাষায় খেয়ালের জন্যই নাকি তার বেঁচে থাকা।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিকালে রাজধানী ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে বসেছে কবীর সুমনের বাংলা খেয়াল অনুষ্ঠান। সেখানেই নিজের সৃষ্টি করা খেয়াল পরিবেশন করেছেন তিনি। একইসঙ্গে শুনিয়েছেন এই সংগীত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গল্প।

সুমন বলেন, ‘বেঁচে আছি বাংলা ভাষার খেয়ালের জন্য। জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায় একবার বলেছিলেন, বাংলা আধুনিক গানকে নদীর সঙ্গে তুলনা করা হলে আমাদের সুমন হলেন তার প্রধান এক ঘাট। আমি জানপ্রাণ দিয়ে গানের কথা ও গঠনে কিছু পরিবর্তন আনতে পেরেছি। ছোটবেলা থেকে বাংলা আধুনিক গান শুনেছি। এখন যদি আমাকে বলেন, কয়েকদিন ধরে টানা বাংলা আধুনিক বাংলা গান গেয়ে দেব। আপনাদের অসুবিধা হবে না।’

খেয়াল শুনতে কিংবা গাইতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই উল্লেখ করে কবীর সুমন জানান, ‘ড্রাম বাজান, ঢোল বাজান। দেখুন, শুধু সংগীতটা যেন থাকে।’

নবীন শিল্পীদের উদ্দেশে সুমনের উপদেশ, ‘গান নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করুন। এক্সপেরিমেন্ট করতে ভয় পাবেন না। গান নিয়ে ভয় পাবেন না। মনের আনন্দে গান করুন। মনের আনন্দে ভুল করুন। ভুল করে থেমে যাবেন না। আবার ভুল করুন।’

গান নিয়ে আশার বাণী শোনানোর পাশাপাশি কিছু আক্ষেপও শুনিয়েছেন সুমন। তার ভাষ্যে, ‘সংগীতশিল্পীরা বুড়ো হয়ে গেলে তাদের স্থান ক্রমেই ছোট হতে থাকে। পরমেশ্বরের দোয়ায় আমি পাঁচ হাজার বছর বেঁচে থাকি গলা কিন্তু থাকবে না। কাজেই বয়স হলে আর দাম থাকে না।’

এ আয়োজনে সত্যকিঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ও আজাদ রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন সুমন। খেয়ালে আয়োজনে দর্শক হিসেবে বাংলাদেশের কণ্ঠশিল্পী অর্ণব, গাউসুল আলম শাওনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২১ অক্টোবর) একই মঞ্চে আধুনিক বাংলা গান দিয়ে ঢাকায় এবারের সংগীত সফরের ইতি টানবেন কবীর সুমন। এরপর নিজ শহর কলকাতার উদ্দেশ্যে উড়াল দেবেন এই প্রথিতযশা সংগীতজ্ঞ।

কেএইচটি