‘ইত্যাদি’ খ্যাত সংগীতশিল্পী আকবর মারা গেছেন। রবিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর সোয়া ৩টার দিকে গায়কের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন তার মেয়ে অথৈ।

‘সিঙ্গার আকবর’ ফেসবুক আইডি থেকে আকবর কন্যা লেখেন, ‘আব্বু আর নেই’।

দীর্ঘদিন ধরে নানান রোগের সঙ্গে লড়তে থাকা আকবরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ৫ নভেম্বর দুপুরে তাকে রাজধানীর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে (বারডেম) ভর্তি করা হয়। এরপর আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৯ নভেম্বর ভোরে তাকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে আর ফিরতে পারলেন না এই গায়ক।

স্ত্রী-কন্যার সঙ্গে আকবর

দুই বছর ধরে ডায়াবেটিস, জন্ডিস, কিডনি, রক্তের প্রদাহসহ আরও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন আকবর। দুটি কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ায় তার শরীরে পানি জমে ডান পা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সপ্তাহ দুই আগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেই পা কেটে ফেলা হয়। পা কাটার পর তার কিডনি ও লিভারের সমস্যা আরও বেড়ে যায়। এ জন্যই তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার কথাও ছিল। কিন্তু তার আগেই পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে।

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা পোস্টের কাছে আকবরের চিকিৎসার সবশেষ অবস্থা জানিয়েছিলেন তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা। তিনি বলেছিলেন, ‘আকবরের চিকিৎসার কোনো উন্নতি হয়নি। প্রস্রাব আর পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্ত যাচ্ছে। ডাক্তার জানিয়েছেন রক্ত যাওয়া বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। ডাক্তার আরও জানিয়েছেন এ অবস্থা থেকে ফেরার চান্স খুব কমই থাকে। তারপরও প্রস্রাব আর পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্ত যাওয়া বন্ধ হলে তারা হয়তো আমাদের কিছুটা আশা দিতে পারতেন।’

‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে আবিষ্কারক হানিফ সংকেতের সঙ্গে গায়ক আকবর

উল্লেখ্য, দেড় যুগ আগে বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে’ গানটি গেয়ে তুমুল হইচই ফেলে দেন তখনকার পেশায় রিকশাচালক আকবর। তবে সেই গান বদলে দেয় তার জীবন। রাস্তায় রিকশায় প্যাডেল মারা ছেড়ে গানে মনোনিবেশ করেন তিনি। এরপর ‘তোমার হাত পাখার বাতাসে’ শিরোনামে ইত্যাদির জন্য মৌলিক গান করেন তিনি। এটিও পায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা। সেই থেকে নতুন নতুন গান প্রকাশের পাশাপাশি দেশে-বিদেশের মঞ্চেও নিয়মিত গাইতে থাকেন আকবর।

আরআইজে/কেএইচটি