খল চরিত্রে একসময় টলিউডের বড় পর্দা কাঁপাতেন অভিনেতা কৌশিক ব্যানার্জি। তার হাড়হিম করা সংলাপ দর্শক সিনেমা হলের পর্দায় সিটি মেরে উপভোগ করতেন। এখন অবশ্য বড় পর্দায় দেখা না গেলেও ছোট পর্দার নিয়মিত মুখ তিনি।

পর্দার যতটা বাজে ও ভয়ানক চরিত্রের অধিকারী কৌশিক, বাস্তবেও কি তাই? না, বরং অফস্ক্রিনে তিনি পুরোই বিপরীত চরিত্রের অধিকারী। অত্যন্ত শান্ত ও ভীতু স্বভাবের এই অভিনেতার পছন্দের তালিকায় রয়েছে বাচ্চা এবং কুকুর। এক রিয়েলিটি শোতে এসে অভিনেতা শেয়ার করেছিলেন তার এক অভিজ্ঞতার কথা।

সেদিনকার ঘটনার বর্ণনায় তিনি জানান, একদিন যাদবপুর থেকে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন কৌশিক। তখন শহরজুড়ে মুষলধারায় বৃষ্টি চলছে। হঠাৎই তার চোখে পরে, কয়েকজন ছোট ছেলেমেয়ে বৃষ্টিতে ভিজছে। কৌশিকের মায়া হলো। বাচ্চাদের ডেকে গাড়িতে উঠতে বলেন। তখন খেয়াল না করলেও, কিছুক্ষণ পরে হঠাৎই একজন চিনতে পারে কৌশিককে। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থামিয়ে মেয়েটি বলে উঠল, ‘তুমি বাজে লোক, আমি তোমার গাড়িতে উঠব না।’ এরপরই দলের সবাইকে নিয়ে চলে যায় সে।

তৎক্ষণাৎ বিষয়টি তাকে মর্মাহত করলেও পরে ঠিকই অনুধাবন করেন খল চরিত্রে নিজের সাফল্যের কথা। ১৯৮৯ সালে দিনেন গুপ্তার ছবি ‘প্রিয়তমা’তে প্রথম অভিনয় করেন কৌশিক। ছোট থেকেই নাটক, থিয়েটার, সিনেমা দেখতে ভালোবাসতেন কৌশিক। বাবা হারাধন ব্যানার্জির অনুপ্রেরণাতেই তার অভিনয়ে জগতে প্রবেশ ঘটে।

কৌশিকের সুপারহিট ছবিগুলো হলো ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’, ‘দায় দায়িত্ব’, ‘লাঠি’, ‘হুইলচেয়ার’, ‘দান প্রতিদান’, ‘সেদিন দেখা হয়েছিল’, ‘বাদলা’, ‘মিনিস্টার ফাটাকেষ্ট’, ‘অগ্নিপথ’, ‘অন্ধ প্রেম’, ‘গুরু’, ‘প্রতিহিংসা’, ‘প্রতারক’, ‘গুরু শিষ্য’, ‘জামাই বাবু জিন্দাবাদ’, ‘প্রতিবাদ’ প্রভৃতি।

১৯৮৪ সালে শ্যামল মিত্রের কন্যা মনবীনা মিত্রকে বিয়ে করেন কৌশিক। তাদের এক পুত্রসন্তান রয়েছে। ১৯৯৬ সালে এই জুটির বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এক বছর পর, ১৯৯৭ সালে অভিনেত্রী লাবণী সরকারকে বিয়ে করেন কৌশিক।