দীর্ঘ দিন শারীরিক অসুস্থতার সঙ্গে লড়ে আজ সোমবার না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন বরেণ্য চিত্রনায়ক ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। জীবিত অবস্থায় কিংবদন্তী এ অভিনেতার শেষ জন্মদিন ছিল গত বছরের ১৮ আগস্ট। নিজের জীবনের বিশেষ দিনটিকে ঘিরে একদিন আগে ১৭ আগস্ট একটি ভিডিও বার্তাও দিয়েছিলেন। সেখানে দেশবাসীর উদ্দেশে বার্তা দিলেও নিজের জন্মদিন নিয়ে কিছু বলেননি এ অভিনেতা। আর সুস্থ থাকলেও কখনো জন্মদিন উদযাপন করতেন না এ অভিনেতা।

কারণ ‘মিয়া ভাই’খ্যাত এ অভিনেতা ১৯৭৫ সালের পর থেকে নিজের জন্মদিন পালন বন্ধ রেখেছেন। মূলত সে বছরের ১৫ আগস্টের পর থেকেই নিজের জন্মদিন পালনে উৎসাহী নন ফারুক। কারণ তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, আগস্ট হলো শোকের মাস। এ মাসে জন্মদিন উদযাপন করা সাজে না। অন্তত তার মতো বঙ্গবন্ধুর স্নেহভাজনের পক্ষে তো না-ই!

আরও পড়ুন <-> শেষ জন্মদিনে দেশবাসীর উদ্দেশে যা বলেছিলেন ফারুক

এ প্রসঙ্গে অভিনেতা জায়েদ খানও গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, জাতির পিতা ফারুক ভাইকে খুব আদর করতেন। যে কারণেই তিনি আগস্ট মাসে কোনো রকম উৎসব করেন না। এটা শোকের মাস।

আরও পড়ুন <-> নায়ক ফারুক আর নেই

উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট মানিকগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। তবে তার বেড়ে ওঠা পুরান ঢাকায়। স্কুল জীবনেই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। এরপর ৬৬’র ছয় দফা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। সে জন্য তার নামে ৩৭টি মামলা দায়ের হয়েছিল। কিন্তু দমে যাননি ফারুক। পরবর্তীতে ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন।

আরও পড়ুন <->  ফারুকের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছিল বেশ কয়েকবার

ফারুকের সিনে ক্যারিয়ার শুরু হয় ১৯৭১ সালে মুক্তি পাওয়া এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ সিনেমার মাধ্যমে। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি অভিনয় করেছেন ‘আবার তোরা মানুষ হ’, ‘আলোর মিছিল’, ‘সুজন সখী’, ‘লাঠিয়াল’, ‘সূর্যগ্রহণ’, ‘মাটির মায়া’, ‘নয়নমনি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘নাগরদোলা’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘কথা দিলাম’, ‘মাটির পুতুল’, ‘সাহেব’, ‘ছোট মা’, ‘এতিম’, ‘ঘরজামাই’, ‘মিয়া ভাই’র মতো অসংখ্য সিনেমায়।

ফারুক তার অভিনয়ের জন্য ১৯ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে মনোনীত হয়েছিলেন। কিন্তু তার হাতে পুরস্কার উঠেছিল কেবল একবার। অবশ্য ২০১৬ সালে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। অভিনয়ের বাইরে তিনি ঢাকা ১৭ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য।

এমজে