সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ূয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন ফুড ভ্লগার ফাবিয়া হাসান মনিষা, যিনি ফেসবুক বা ইউটিউবে ফুডআপ্পি নামেই বেশি পরিচিত।

এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে ফাবিয়া হাসান মনিষা লেখেন, ‘ভাগ্যিস আমার বাবা-মায়ের অঢেল টাকা ছিলোনা, থাকলে তারাও মনে হয় টাকা দিয়ে আমাকে অনেক দামি প্রাইভেট ভার্সিটিতে (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে) অশ্লীলতা শিখতে পাঠাতো।’

তার সেই পোস্ট মোটেও ভালোভাবে নেননি ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। কমেন্টবক্সে তিনি লেখেন, ‘তাদের (ফুড আপ্পির বাবা-মায়ের) টাকা আরেকটু কম থাকলে আরও ভালো হতো। তাহলে স্মার্টফোন/ ইন্টারনেট কিনে এসব অনর্থক স্ট্যাটাস দিতে পারতেন না। আর আমার মনে হচ্ছে তাদের টাকা না থাকায় ভালোই হয়েছে। আপনার যে জ্ঞান আর চিন্তাধারা, তাতে আপনাকে প্রকৃত শিক্ষা তো দিতে পারতো না; অযথা তাদের টাকাটা নষ্ট হতো। আপনার জানার সুবিধায় বলে রাখি, বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ৭০% ছেলে-মেয়ের পরিবারের অঢেল টাকা নেই।’

সেই ঘটনার পর এবার সরাসরিই নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে সামাজিক মাধ্যমে পরিচিতি পাওয়া ব্যক্তিদের ‘তারকা’ বানানো প্রসঙ্গে কথা বলেছেন ফারিয়া। যেখানে তিনি সাধারণ মানুষের উদ্দেশে কিছু বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে ফেসবুকে দেওয়া ওই পোস্টে শবনম ফারিয়া বলেন, ‘অনুগ্রহ করে কাদের তারকা বা রোল মডেল (আদর্শ) বানাবেন, কাদের ফলো (অনুসরণ) করবেন জেনে বুঝে করবেন। অশিক্ষিত, অসভ্য মানুষদের যদি তারকা বানানোর চেষ্টা করেন, পরবর্তীতে ওইরকম মানুষই সামনে আসবে। যারা জানে না বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় মেরিট বেজড স্কলারশিপ বা  নিড বেজড স্কলারশিপ বলে একটা বিষয় আছে, অনুগ্রহ করে তাদের অনুসরণ করে তারকা বানাবেন না। একজন অযোগ্য মানুষকে তারকা বানিয়ে আরও ১০ জন অযোগ্য মানুষকে উৎসাহ দিচ্ছেন বেফাঁস কথা বলে সেটাকে আবার ডিফেন্ড করার। প্লিজ এটা করবেন না।’

বিষয়টিকে দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার উল্লেখ করে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘বিষয়টা সরকারি বেসরকারি নিয়ে না। একজন শিক্ষিত মানুষ কোনোদিন অশ্লীল ইঙ্গিত দিয়ে এটা বলতে পারে না যে পরিবারের অঢেল টাকা না থাকা সত্ত্বেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অধিকাংশ ছেলেমেয়েরা কোনো সোর্স(উৎস) থেকে টাকা আয় করে পড়াশোনা করে!’

নিজের বাস্তবজীবনের চিত্রের কথা জানিয়ে ফারিয়া বলেন, ‘আমি বর্তমানে আইইউবিতে (ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ) মাস্টার্স (স্নাতকোত্তর) করছি। আমার একজন ব্যাচমেটও নেই যারা চাকরি করছে না কিংবা চাকরির চেষ্টা করছে না। ভালো চাকরি পাচ্ছে না বলে অনেককে দেখছি টিউশনি করাচ্ছে। যেহেতু আমার আন্ডারগ্রেডও (স্নাতক) একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছিল, তখনো আমার অনেক ক্লাসমেটদের দেখেছি পার্টটাইম চাকরি কিংবা টিউশনি করতে।’

এরপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্য করে এই তারকা বলেন, ‘আপনারা যারা এখনো এসব মানুষদের দিয়ে আপনাদের প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা করাচ্ছেন, আপনারাও কিন্তু এসব বক্তব্যকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। অনুগ্রহ করে শুধুমাত্র একটু প্রচারণার জন্য এসব মানুষদের উৎসাহ দেবেন না। প্লিজ।’

এনএইচ