মিতা হক [১৯৬২-২০২১]

রোববার (১১ এপ্রিল) ভোরে না ফেরার দেশে চলে গেছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত দেশের নন্দিত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী মিতা। রবীন্দ্রসংগীতের জন্যই তার এত এত জনপ্রিয়তা, এত এত এত অর্জন। সেই মিতা হক কী না জীবনের প্রথম স্টেজ অনুষ্ঠানে নজরুলসংগীত গেয়েছিলেন!

মিতা হকের গাওয়া সেই নজরুলসংগীতটি হলো ‘নাচে ইরানি মেয়ে’। এক সাক্ষাতকারে প্রথম স্টেজ অনুষ্ঠানের কথা জানতে চাইলে তিনি এই তথ্য জানান।

মিতা হক বলেছিলেন, “আমি প্রথম স্টেজে গান করি পাঁচ-ছয় বছর বয়সে। প্রথম স্টেজ অনুষ্ঠানে একটা বড় উঁচু টেবিল দিয়ে তার ওপরে আমাকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে গেয়েছিলাম একটা নজরুলগীতি-‘নাচে ইরানি মেয়ে’।”

তিনি আরও বলেছিলেন, ‘সেই অনুষ্ঠানটি হয়েছিল এখনকার আড়ংয়ের পেছনে, নিউ কলোনিতে। ওই ফ্ল্যাটে আমরা উঠেছি আমার জন্মের পরের বছর ১৯৬৩ সালে। আমার বাড়ি তো গানের বাড়ি। নানার বাড়িতে গান, দাদার বাড়িতে গান। আমি তখনো মা-বাবার একমাত্র সন্তান। মা-বাবা তো ভীষণ খুশি। আশপাশের প্রতিবেশীদের প্রতিক্রিয়াও ছিল অনেক মজার। তখনকার বাঙালি সমাজটা ছিল প্রকৃত বাঙালি সমাজ। মানুষের সঙ্গে মানুষের প্রেম, শ্রদ্ধাবোধ এবং সহমর্তিতা ছিল। যখন ড্রয়িং রুমে বসে ওস্তাদজির কাছে গান শিখতাম, তখন জানালার পাশে সব ফ্ল্যাটের মানুষ আমাকে দেখত, দাঁড়িয়ে থাকত।”

উল্লেখ্য, মিতা হকের জন্ম ১৯৬২ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকায়। তিনি প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা খালেদ খানের স্ত্রী। তার চাচা দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্রপথিক ও রবীন্দ্র গবেষক ওয়াহিদুল হক। মেয়ে জয়িতাও রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী।

সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য ২০২০ সালে বাংলাদেশ সরকার মিতা হককে একুশে পদকে ভূষিত করে। এছাড়াও শিল্পকলা পদক, বাংলা একাডেমি রবীন্দ্র পুরস্কার, চ্যানেল আই রবীন্দ্র মেলা পুরস্কার এবং ভারত থেকে অনেক সম্মানজনক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

আরআইজে