গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথেই থেই নিখোঁজ হন ভারতের কৌতুকাভিনেতা সুনিল পাল। এ খবর ছড়াতেই শুরু থেকে আশঙ্কা করা হয়, তিনি অপহৃত হয়ে থাকতে পারেন। এরপর গত বুধবার তিনি মুম্বাইয়ে নিজ বাসায় ফেরেন। জানা গেল, সত্যিই অপহরণ করা হয়েছিল সুনীলকে!

শুরুতে অপহরণের বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন সুনিল। পরে বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করলেন তিনি। আপাতত তিনি সেই ঘটনার অভিঘাত কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন তিনি, পাশাপাশি আইনি পদক্ষেপ করার কথাও ভাবছেন।

বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ের বাড়িতে বসে সুনিল বলেন, ‘এটা অবশ্য অপহরণের ঘটনা। গত ২ ডিসেম্বর হরিদ্বারে একটি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ ছিল। সেখানে যাওয়ার পথেই ঘটনা ঘটে।’

অভিনেতা জানান, তাকে আটকে রেখে ২০ লাখ রুপি দাবি করে অপহরণকারীরা। দর কষাকষি করকে ৮ লক্ষ রুপি মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পান তিনি। কিন্তু বিভীষিকার ওই ২৪ ঘণ্টা কোনোভাবেই মাথা থেকে বের করতে পারছেন না সুনীল। এতটাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত যে, অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবেন কি না বুঝে উঠতে পারছেন না।

সুনিল জানান, তাকে একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। একটা ফাইভ স্টার হোটেলে সেই জন্মদিনের পার্টির আয়োজন করা হয়। সেখানেই কৌতুকশিল্পী হিসেবে অনুষ্ঠান করার কথা ছিল সুনীলের। 

সুনিলের কথায়, ‘অনুষ্ঠান করার জন্য আমাকে ৫০ শতাংশ অগ্রিম দেওয়া হয়েছিল। বিমানবন্দরে গাড়ি পাঠানো হয়েছিল। এক ঘণ্টা পরে অন্য গাড়িতে বসতে বলে। সেখান থেকেই আমার দুঃস্বপ্ন শুরু। আমাকে তখনই বলা হল, আমি অপহৃত হয়েছি। আমার চোখ বেঁধে অন্য এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হল। ওরা বলেছিল, ওদের কাছে অস্ত্র রয়েছে। তাই আমার জীবনেরও ঝুঁকি রয়েছে। ওরা ৭-৮ জন ছিল। কেউ কেউ মাদকাসক্ত ছিল। কেউ কেউ খুব চিৎকার করছিল।’

কৌতুকশিল্পী মুক্তিপণ বিষয়ে বলেন, ‘আমার থেকে ২০ লাখ রুপি চাওয়া হয়। আমি বলি, এত টাকা আমার কাছে নেই। তারপর ওরা ১০ লক্ষ রুপি মুক্তিপণ নিতে রাজি হয়। আমি বন্ধুদের ফোন করা শুরু করি। অবশেষে মুক্তিপণ হিসেবে ওদের ৭.৫-৮ লাখ রুপি দিই।” মুক্তিপণ দেওয়ার পরে সুনীলকে দিল্লি-মিরাট রোডে ছেড়ে দিয়ে যান অপহরণকারীরা। সঙ্গে তারা কুড়ি হাজার টাকাও দিয়ে যান কৌতুকশিল্পীকে, যাতে তিনি বাড়ি ফিরতে পারেন।’

পুলিশে অভিযোগ প্রসঙ্গে সুনিল বলেন, ‘আমি এখনও আতঙ্কে রয়েছি। পুলিশ অভিযোগ দায়ের করতে বলেছে। তবে আমি জানি না, অভিযোগ দায়ের করব কি না। ওরা আমাকে কোনও হুমকি দেয়নি। তবে আমি পদক্ষেপ করলে পরিবারের ক্ষতি করবে বলে জানিয়েছিল। তাই আমি ভাবার সময় নিচ্ছি। ওই ঘটনা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছি, খুব ভয় করছে। আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ ২৪ ঘণ্টা ওটাই। এর থেকে বেরোতে আমার সময় লাগবে।’

ডিএ