সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একের পর এক বিতর্কের জন্ম দেওয়া সংগীতশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেল তার স্ত্রীকে নিয়ে পাবনা মানসিক হাসপাতালে ঘুরতে গেছেন। সেখান থেকে ঈশ্বরদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় যান। পথে পথে বিভিন্ন লিচু বাগান ঘুরে দেখেন তিনি।

শুক্রবার (২১ মে) বিকেলে ঈশ্বরদী যাওয়ার পথে ‘লিচুর রাজ্যেখ্যাত’ জয়নগর এলাকায় প্রাইভেটকার থামিয়ে লিচুসহ ছবি তুলেছেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সালসাবিল মাহমুদ। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লিচুসহ ছবি পোস্ট করেন। ছবির ক্যাপশনে লিখেছেন নিলয়দের বাসার গাছের লিচু। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছলিমপুর, জয়নগরসহ কয়েকটি এলাকার লিচু বাগান ঘুরেছেন নোবেল। পরে জয়নগরে প্রাইভেটকার থামিয়ে লিচুসহ ছবি তোলেন। এ সময় উৎসুক জনতা ঘিরে ধরে। পরে হাত নেড়ে নোবেলকে বিদায় জানাতেও দেখা যায় ভক্তদের। 

জয়নগরের মুদি দোকানি স্বপন প্রামাণিক বলেন, আমি ফেসবুক ব্যবহার করি না। তাই নোবেলকে চিনি না। তবে চায়ের দোকানে অনেক সমালোচনা শুনি। সন্ধ্যায় দোকানের সামনে প্রাইভেটকার থামিয়ে কয়েকটি ছবি তুলেছেন। পরে লোকজন এগিয়ে আসতেই গাড়িতে করে চলে যান।

স্থানীয় যুবক সামিউল ইসলাম সিফাত ‘প্রিয় ঈশ্বরদী গ্রুপে’ ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘ঈশ্বরদীর জয়নগরে এসেছেন বিতর্কিত সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল।’

একই গ্রুপে আনোয়ার হোসেন লিখেছেন, ‘সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নোবেল পাকশি রিসোর্টসহ বেশ কয়েকটি বিনোদনকেন্দ্রে ঘুরেছেন। বিকেলে বিভিন্ন লিচু বাগান ঘুরে দেখেন। সন্ধ্যায় ঈশ্বরদীকে বিদায় জানিয়ে কুষ্টিয়ায় গেছেন।’

জয়নগর এলাকায় প্রাইভেটকার থামিয়ে লিচুসহ ছবি তুলেছেন নোবেল

এর আগে বৃহস্পতিবার (২০ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে পাবনা মানসিক হাসপাতালের রোগীদের সঙ্গে জাতীয় সংগীত গাওয়া ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেন। এ নিয়ে ফেসবুকে অনেকেই সমালোচনা করেছেন।

ভিডিওতে দেখা যায়, পাবনা মানসিক হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন নোবেল। পাশে রয়েছেন স্ত্রী সালসাবিল। গ্রিলের ওপাশে মানসিক রোগীদের সঙ্গে কথা বলছেন নোবেল। তাদের জাতীয় সংগীত গেয়ে শোনাচ্ছেন। মানসিক রোগীরা নোবেলের সঙ্গে সুর মেলাচ্ছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মানসিক হাসপাতাল থেকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় ঘুরতে যান তারা। ব্রিজের পাশে একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করলে সমালোচনার মুখে পড়েন।

জানতে চাইলে পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালক ডা. আবুল বাশার মোহা. আসাদুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ ছুটির দিন থাকায় নোবেল হাসপাতালে যাওয়ার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। ফেসবুকে ছবি দেখে হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্টের কাছ থেকে খবর নিয়ে জানলাম; দর্শনার্থী হিসেবে হাসপাতালে ঘুরতে এসেছেন। সে ফাঁকে রোগীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ সময় তার স্ত্রী সঙ্গে ছিলেন।    

২০১৯ সালে ভারতের জি বাংলা টেলিভিশনের রিয়েলিটি শো ‘সা রে গা মা পা’-তে অংশ নিয়ে আলোচনায় আসা নোবেল প্রথম থেকেই বিতর্কের জন্ম দেন। নিজের গানের প্রচারণায় কূটকৌশলের জন্য গত বছর র‍্যাব কার্যালয়ে গিয়ে ক্ষমা চান।

এবারও ঈদের আগ থেকে নিজের ‘মেহেরবান’ গান প্রকাশের আগে ব্যান্ড লিজেন্ড নগর বাউল জেমস, তাপস, আহম্মেদ হুমায়ুন, ইথুন বাবুকে নিয়ে ফেসবুকে বাজে মন্তব্য করেন তিনি।

এছাড়া দুর্ঘটনার শিকার হয়ে তাকে মিথ্যা প্রচারণা চালাতেও দেখা গেছে। সর্বশেষ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বাজে মন্তব্য করেন। সময় টিভির অনলাইন সংস্করণের এক সাংবাদিককে অপহরণের হুমকি দেন। এ ঘটনায় সময় টিভি কর্তৃপক্ষ জিডি করলে সাংবাদিকদের নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট দিয়ে পরে ক্ষমা চান। সেই সঙ্গে ব্যান্ড তারকা জেমসের কাছেও ফেসবুকে ক্ষমা চেয়েছেন।

রাকিব হাসনাত/এএম