যেকোনো অভিনেতার জন্যই কিংবদন্তী পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে অভিনয় করা ছিল এক পরম স্বপ্ন। সেই সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার বেদনা যে ভোলার নয়, তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন অভিনেতা শাশ্বত চ্যাটার্জি। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে নিজেই এ কথা জানিয়েছেন তিনি।

শর্মিলা শো হাউজের একটি ভিডিওতে সাক্ষাৎকার চলাকালীন শাশ্বত জানান, ছোটবেলায় সত্যজিৎ রায়ের একটি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েও মায়ের কঠোরতার কারণে সেটি ফসকে যায়। ঘটনাটি ছিল ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ ছবিতে ছোট্ট ‘রুকু’ চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব।

শাশ্বত বলেন, ‘আমার মা কিছুতেই চাননি যে আমার স্কুল কামাই হোক। একদিন স্কুল থেকে ফেরার সময় মা আমাকে নিয়ে গিয়ে চুল কেটে একদম 'বাটি ছাট' করিয়ে দিলেন। কারণ জানতে চাইলে মা বললেন, ‘আমি নাকি খুব ঘামি, তাই চুল কেটে দেওয়া হচ্ছে।’ বাড়িতে ফিরতেই বাবা মায়ের উপর খুব রেগে গেলেন। তখন মা বাবাকে বললেন, ‘আমি চাই না ওর স্কুল কামাই হোক, তাই চুল কাটিয়ে দিয়েছি।’ ‘

পরের দিন সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল শাশ্বতর। বাবা তাকে নিয়ে গেলেন সত্যজিৎ রায়ের বাসায়। দরজা খুলতেই সত্যজিৎ রায় শাশ্বতকে দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘এ কী করেছ! এটা তো একদম বাটি ছাট হয়ে গিয়েছে।’

বাবার মুখে আসল ঘটনা শুনে সত্যজিৎ রায় হেসে বলেন, ‘ঠিক আছে, কোনো অসুবিধা নেই। তবে আমি আর অপেক্ষা করতে পারবো না। আমাকে অন্য কাউকে নিয়ে ছবিটা তৈরি করে ফেলতে হবে।’

শাশ্বতর এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর অনেকেই তাদের মায়ের কঠোর শাসনের স্মৃতিচারণ করেছেন, আবার কেউ কেউ বলেছেন তার মায়ের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। তবে একবাক্যে সবাই স্বীকার করেছেন, শাশ্বত যদি রুকুর চরিত্রে অভিনয় করতেন, তবে সেটাও নিঃসন্দেহে জনপ্রিয় হতো।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ ছবিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সিদ্ধার্থ চ্যাটার্জি, সন্তোষ দত্ত, উৎপল দত্ত, হরনাথ ব্যানার্জি, বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়, মনু মুখোপাধ্যায় সহ আরও অনেকে অভিনয় করেছিলেন। 'রুকু' চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন জিত বোস।

এমআইকে