নেটফ্লিক্সে সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘রে’ দেখার পর পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের প্রশংসা করেছিলেন তসলিমা নাসরিন। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা গড়াতে না গড়াতেই আফসোস করতে শুরু করলেন এই লেখিকা। মূলত সৃজিতের পূজায় বিশ্বাস দেখেই মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছে তসলিমার।

সম্প্রতি ‘X= প্রেম’-এর মহরতের কিছু মুহূর্ত নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেন সৃজিত। যেখানে দেখা যায়, শুটিং শুরু করার আগে পূজা করা হয়েছিল। পুরো টিমের সঙ্গে হাসিমুখে ছবি তুলে পোস্ট করেছিলেন সৃজিত। ঠিক এই বিষয়টিতেই চটেছেন তসলিমা। এ কারণেই পরিচালককে প্রশংসা করার পর কটাক্ষ করতেও পিছপা হলেন না তিনি।

ফেসবুকে তসলিমা জানান, তিনি বিশ্বাস করতে ভালোবাসেন যে, যারা স্মার্ট, জ্ঞানী-গুণী, তারা আল্লাহ, ভগবান, ঈশ্বরের মতো বস্তুতে বিশ্বাস করেন না। কিন্তু তার এই বিশ্বাস তখন হোঁচট খায়, যখন দেখেন রকেটবিজ্ঞানী খেলনা-রকেট হাতে নিয়ে মন্দিরে যান পূজা দিতে। যেন আসল রকেট উৎক্ষেপণে দুর্ঘটনা না ঘটে। যখন জটিল ব্রেইন সার্জারি করার আগে মসজিদে গিয়ে অলৌকিকের উদ্দেশে কপাল ঠেকান বড় ডাক্তারেরা। যখন বিরাট কোনো শিল্পী তার প্রদর্শনী শুরু হওয়ার আগে গলায় ঝুলিয়ে রাখা ক্রুশবিদ্ধ যীশুতে চুম্বন করেন। তিনি বিস্মিত হন।

এরপরই নির্বাসিত এই লেখিকা সৃজিত প্রসঙ্গ টেনে ফেসবুকে লেখেন, ‘সৃজিত মুখার্জির ‘ফরগেট মি নট’ দেখে তাকে চূড়ান্ত স্মার্ট বলে রায় দিয়েছি। স্মার্ট মানেই তো আমার চোখে লৌকিকে বিশ্বাসী। অলৌকিকে নয়। কিন্তু বললাম না বারবার আমি হোঁচট খাই! চোখে পড়ল তার একখানা ফেসবুক পোস্ট। তার নতুন ছবির মহরতে ভগবানের মূর্তি, আর তার পাদদেশে কলা, নারকেল, ফুল-টুলের পূজা। ঈশ্বর বিশ্বাসীরাও ট্যালেন্টেড হতে পারেন, তা আমি অস্বীকার করছি না। অথবা সৃজিত ঠিকই নিরীশ্বরবাদী, ছবির প্রযোজক করেছেন পূজার আয়োজন, প্রযোজকদের তো টাকা-পয়সা থাকলেই হয়, ট্যালেন্ট না থাকলেও চলে! যেহেতু প্রযোজক নেপথ্যে থাকেন, তাই গোটা সাজসজ্জার কৃতিত্ব পরিচালককে দিয়েই অভ্যাস আমাদের।’

সিনেমার শুটিংয়ের আগে পূজা করার এই রীতি মানার নেপথ্যে তসলিমা অবশ্য পুরো দোষ সৃজিতের ওপর দিতে নারাজ। তিনি প্রযোজকদেরও কাঠগড়ায় তুলেছেন এর জন্য।

এসএসএইচ/এসএসএইচ