মায়াবী চেহারা, স্নিগ্ধ হাসি, আর নিখুঁত অভিনয়; এই তিনের সমন্বয়ের নাম সুমাইয়া শিমু। কয়েক বছর আগেও তিনি ছিলেন টিভি পর্দার প্রথম সারির অভিনেত্রী। মাঝে অভিনয় থেকে কিছুটা দূরে থেকেছেন। সেই বিরতি ভেঙে সম্প্রতি কাজেও ফিরেছেন। আড়াল হওয়া, ফিরে আসা এবং ক্যারিয়ারের অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে তিনি কথা বলেছেন ঢাকা পোস্ট-এর সঙ্গে। তুলে ধরেছেন কামরুল ইসলাম

অনেক দিন পর নাটকে কাজ করলেন। কী মনে হয়, পরিবেশটা আগের মতো আছে?

আসলে মাত্র তো একটি নাটকে কাজ করলাম। আরও কিছু কাজ করার পর হয়ত পুরোপুরি বুঝতে পারব। তবে যেটুকু দেখলাম, তাতে মনে হলো তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।

গণমাধ্যম থেকে সোশ্যাল মিডিয়া সবখানে আপনাকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কেমন লাগছে?

অবশ্যই অনেক ভালো লাগছে। এত দিন পর কাজে ফেরার পর সবাই এভাবে স্বাগত জানাচ্ছেন, ভালোবাসা প্রকাশ করছেন, এটা সত্যিই একজন শিল্পীর জন্য অনেক বড় পাওয়া। আসলে কাজে ফেরার পেছনে আমার দর্শকদের ভূমিকাই বেশি। তারা আমাকে একপ্রকার বাধ্য করেছেন। আমার নিজের তো অবশ্যই ইচ্ছে বা ভালো লাগা ছিল। তবে সেটার সঙ্গে দর্শকদের আহ্বান আমাকে ফিরিয়ে এনেছে।

বিরতি নেয়ার পেছনে বিশেষ কোনো কারণ ছিল?

না, সেরকম বিশেষ কোনো কারণ নেই। আসলে এমনিতেই কাজ করা হয়নি।

এই সময়ের নাটক দেখা হয়?

অভিনয় থেকে দূরে থাকলেও আমি নাটকেরই মানুষ। যতটা সম্ভব হত, নাটক দেখতাম, খোঁজ-খবর রাখতাম। এখন তো কাজের পরিসর অনেক বড় হয়েছে। টিভির পাশাপাশি ইউটিউব আর বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এসেছে। সব মিলিয়ে ভালো কাজই হচ্ছে।

এখনকার কোন অভিনেতা-অভিনেত্রীর কাজ আপনার পছন্দ?

অনেকের কাজই ভালো লাগে। তবে নির্দিষ্ট করে নাম বলতে চাই না। দেখা যাবে, দু’এক জনের নাম বললে বাকিরা মন খারাপ করবে।

অভিনয় জীবনের সেরা প্রাপ্তি কী?

এই যে সবার ভালোবাসা। আমি মনে করি, একজন অভিনয়শিল্পীর জন্য এর থেকে বড় পাওয়া আর কিছু হতে পারে না। অন্য কোনো কাজ করে মানুষের এমন অকৃত্রিম ভালোবাসা পাওয়া সম্ভব নয়। একটা নাটকের কাজ করতে গেলে আমাদের কিন্তু অনেক কষ্ট করতে হয়। এটা হয়ত দর্শকরা জানেনও না। কিন্তু তারা যখন আমাদের কাজ দেখে খুশি হন, ভালোলাগা প্রকাশ করেন, তখন আমরা সমস্ত কষ্ট ভুলে যাই। দর্শকদের সঙ্গে কিন্তু আমার সরাসরি পরিচয় নেই, আমার কাছে আসারও সেরকম সুযোগ নেই। এরপরও আমি যখন ভালো থাকি, তারাও আমার সেই ভালোটা অনুভব করছেন; আবার আমি যখন কোনো কারণে কষ্ট পাচ্ছি, তাদেরও খারাপ লাগছে। এই নিঃস্বার্থ ভালবাসার চেয়ে বড় প্রাপ্তি কিছু হতে পারে না।

কোনো অপ্রাপ্তি আছে?

না, আমার কোনো অপ্রাপ্তি নেই। কারণ আমি যতটুকু পাই, সেটা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে ভালোবাসি।

লাইফলাইন’ নাটকে যুক্ত হওয়ার পর নতুন কাজের প্রস্তাব পাচ্ছেন?

হ্যাঁ, অনেকেই ফোন করছেন, কাজের জন্য বলছেন। তবে এখন তো লকডাউন চলছে। সমস্ত কাজই বন্ধ। জানি না ঈদের আগে আর কাজ করতে পারব কিনা। তবে যারা ভালো কাজ করেন, আমি তাদের সবার সঙ্গেই কাজ করতে আগ্রহী।

এতো লম্বা ক্যারিয়ার, সিনেমার প্রস্তাব পাননি?

সিনেমায় কাজের জন্য অনেক প্রস্তাব পেয়েছি। তবে বিভিন্ন কারণে তা করা হয়ে ওঠেনি। আসলে সব চরিত্র বা গল্পে তো আমাকে মানাবেও না। কিংবা আমি নিজেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করব না। এখন তো গল্পনির্ভর বেশ ভালো ভালো সিনেমা হচ্ছে দেশে। এরকম কাজের সুযোগ এলে করার ইচ্ছে আছে।

কেআই