নিজেদের প্রাপ্য অধিকার, সম্মান ও সম্মানী আদায়ের লক্ষ্যে একই ছাতার নিচে এসে দাঁড়িয়েছে সংগীতের সঙ্গে যুক্ত গীতিকার, সরকার ও কণ্ঠশিল্পীদের তিন সংগঠন। তাদের এই সংগঠনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ’। বাংলাদেশে ইতিহাসে এবারই প্রথম এভাবে এক হলো সংগীত সংশ্লিষ্টরা।

শনিবার (১০ জুলাই) বেলা তিনটায় এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই সংগঠনটির যাত্রা শুরু হলো। অনলাইনে আয়োজিত এই সম্মেলনে ঘোষণা করা হয় সংগঠনটির প্রথম কার্যনির্বাহী কমিটি। যার ঘোষণা দেন সিঙ্গার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক কুমার বিশ্বজিৎ।

সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ-এর প্রথম কমিটিতে রয়েছেন-সভাপতি রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, মহাসচিব (৩ জন) শহীদ মাহমুদ জঙ্গী, নকীব খান ও কুমার বিশ্বজিৎ, অর্থ ও দফতর সচিব আসিফ ইকবাল, তথ্যপ্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সচিব হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল, সাংস্কৃতিক সচিব বাপ্পা মজুমদার, প্রচার ও প্রকাশনা সচিব জুলফিকার রাসেল এবং নির্বাহী সদস্য মানাম আহমেদ, কবির বকুল, শওকত আলী ইমন ও জয় শাহরিয়ার।

গীতিকবি সংঘের সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার রাসেলের সঞ্চালনায় এই সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিঙ্গার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তটি আমাদের সকলের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান। কিছুদিন আগে সিঙ্গার্স অ্যাসোসিয়েশন করেছি। বিগত দিনের অভিজ্ঞতায় শিখেছি- এখন আমাদের এক হয়ে কাজ করার বিকল্প নেই। যে কোনও বিপদে ও সংকটে পরস্পরের পাশে দাঁড়ানোর বিকল্প নেই। আমাদের আরও দুটি সংগঠন হয়েছে। তিনটি আলাদা সংগঠন হলেও একহয়ে এরমধ্যে অনেক কাজ করেছি আমরা। আজকে এই সংবাদ সম্মেলনের কারণ সেই এক হয়ে কাজ করার বিষয়টি সাংগঠনিকভাবে তুলে ধরা।’

সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ গঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে মিউজিক কমপোজার্স সোসাইটির সভাপতি নকীব খান বলেন, ‘সার্বিক সংগীতের মান উন্নয়ন, সম্মান ও সম্মানীর জন্য আমরা একসঙ্গে লড়াই করার প্রত্যয় নিয়েই এই প্ল্যাটফর্ম গঠন। এটা অরাজনৈতিক ও অলাভজনক সংগঠন। সংগীতের সকল পক্ষকে আস্থায় নিয়ে কাজ করে যাওয়ার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিশ্চিত করার চেষ্টা করবো আমরা। আমাদের স্বপ্ন সংগীতের পাশাপাশি দেশের প্রয়োজনে জনগণের জন্যেও কাজ করার।’

সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ-এর গঠন প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে গীতিকবি সংঘের সভাপতি শহীদ মাহমুদ জঙ্গী বলেন, ‘গত বছর এই সময়টাতেই আমাদের তিনটি সংগঠন সৃষ্টি হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করলাম নিজ নিজ দাবির মধ্যে কিছু অভিন্ন দাবি আছে। ১৭ দফা তৈরি করি। এরপর সবাই মিলে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করি। চিন্তা করলাম, কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে এক জায়গায় আসতে হবে আমাদের। আরও সম্পর্ক উন্নয়ন করতে হবে গীতিকবি, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পীদের মধ্যে। তাই তিনটি সংগঠন রেখেই- একটি ফেডারেল সংগঠন করার পরিকল্পনা করি সবাই। যেটার নাম হলো সংগীত ঐক্য, বাংলাদেশ। তিনটি সমিতি থেকে ৪জন করে প্রতিনিধি নিয়েছি। একটা নির্বাহী কমিটি করেছি। আমাদের ইচ্ছা বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় সংগীতের প্রতিটি মানুষের মাঝে একটা যোগসূত্র তৈরি হোক।’

আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ও বক্তব্য শেষে ‘সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ’-এর নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের করা বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাবে দেন।

আরআইজে