সাহিত্য আর চলচ্চিত্র দুই ভুবনে অসামান্য দ্যুতি ছড়িয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। কলমের আঁচড়ে তিনি যেমন সৃষ্টি করেছেন অবিস্মরণীয় সব চরিত্র, আবার চলচ্চিত্রের পর্দায় ছড়িয়ে দিয়েছেন দেশ, মানুষ ও মানবতার গল্প। তার মতো সফল সাহিত্যিক দুই বাংলাতেই বিরল।

আজ ১৯ জুলাই হুমায়ূন আহমেদের প্রয়াণ দিবস। ২০১২ সালের এই দিনে অগণিত ভক্তকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। দেখতে দেখতে তার চলে যাওয়ার নয় বছর হয়ে গেল।

হুমায়ূন আহমেদের বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। সেজন্য শৈশবে খুব একটা অর্থকষ্ট দেখতে হয়নি তাকে। কিন্তু ভেতর থেকে বরাবরই সাদামাটা ছিলেন তিনি। বড় হওয়ার পরও এই স্বভাবটা তিনি ধরে রেখেছিলেন।

জানা যায়, একদা অসহায়-ক্ষুধার্ত মানুষকে খিচুড়ি দেওয়া হচ্ছিল। খবর পেয়ে ছুটে যান হুমায়ূন আহমেদও। যদিও তাদের পরিবারে অভাব ছিল না। তবুও তিনি গিয়ে কলাপাতা নিয়ে বসে পড়েন খিচুড়ির জন্য। তৃপ্তি সহকারে ত্রাণের সেই খিচুড়ি খেয়েছিলেন তিনি। এছাড়া আরেকবার তিনি এক লঙ্গরখানায় নিজের বোনকে নিয়ে গিয়েছিলেন বিনাপয়সায় খাওয়ার জন্য। বিষয়টি জানা গেছে এ সময়ের আলোচিত কবি ইমতিয়াজ মাহমুদের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে।

প্রয়োজন ছিল না, তবুও হুমায়ূন আহমেদ এমনটা করতেন। কারণ তিনি বুঝতে চাইতেন সমাজের ওই শ্রেণির মানুষের অবস্থা কেমন, তাদের অনুভূতি কেমন। এই অসাধারণ মানসিকতার জন্যই তিনি হয়ে উঠেছিলেন বাংলা সাহিত্যের সেরাদের একজন।

উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। বাবার চাকরির সুবাদে কুমিল্লা, সিলেট, বগুড়া, পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় বেড়ে উঠেছেন তিনি। বগুড়া জিলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

১৯৭২ সালে হুমায়ূন আহমেদের প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশিত হয়। এরপর ধীরে ধীরে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। তার লেখা মোট ১১৮টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। অন্যদিকে চলচ্চিত্র নির্মাণে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৯২ সালে ‘শঙ্খনীল কারাগার’-এর মাধ্যমে। পরবর্তীতে তিনি আরও ১৪টি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন।

কেআই