নাটক থেকে সিনেমা, এখন আবার ওয়েব প্ল্যাটফর্ম; যেখানেই তিনি পা ফেলেছেন; যেন সোনা ফলেছে। চরিত্রে মিশে গিয়ে অভিনয় করা কিংবা ব্যতিক্রম গল্পে হাজির হওয়াই তার স্বভাব, বৈশিষ্ট্য। তিনি চঞ্চল চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে মুক্তি পেয়েছে তার নতুন ওয়েব ফিল্ম ‘মুন্সিগিরি’। এই ওয়েব ফিল্ম এবং আরও কিছু বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন কামরুল ইসলাম

প্রথমবার গোয়েন্দা চরিত্রে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?

অভিনেতা হিসেবে তো বিভিন্ন ধরনের চরিত্রেই কাজ করতে হয়। এটাই একজন অভিনয়শিল্পীর কাজ। এটার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া, পরিচালক যেভাবে চান, সেভাবে নিজেকে তৈরি করা; এভাবেই হয়। যেহেতু এখানে আমার চরিত্রটা ডিবি কর্মকর্তার, সেক্ষেত্রে ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে তাদের কর্ম প্রক্রিয়া সম্পর্কে জেনেছি, দুই দিন প্রশিক্ষণ নিয়েছি। আসলে যখন যেই চরিত্রে কাজ করব, আগে সেটা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা এবং বোঝা উচিৎ।

বলা হচ্ছে মাসুদ মুন্সি কোনো গড়পড়তা গোয়েন্দা নন। তাহলে ব্যতিক্রমটা কী?

সেটা তো বলা যাবে না! এটা জানার জন্যই তো ফিল্মটা দেখতে হবে। গল্প, চরিত্র কোনো কিছু নিয়েই বলা যাবে না। ডিবি কর্মকর্তারা যেসব বিষয়ে কাজ করেন, যেমন হত্যা-গুম; এই ধরণের কিছু বিষয় আছে। তবে কী ভিন্নতা রয়েছে, সেটা দর্শকরা দেখলেই বুঝতে পারবেন।

অমিতাভ রেজা চৌধুরীর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা এবং প্রথম ওয়েব ফিল্ম দুটোতেই আপনি। তিনি কি সবার চেয়ে বেশি আপনার ওপর ভরসা করেন?

একজন নির্মাতা যখন কোনো সিনেমা, ওয়েব সিরিজ বা ওয়েব ফিল্মের গল্প-চিত্রনাট্য সাজান, তখন তিনি কিন্তু অভিনয়শিল্পীদের নিয়েও চিন্তা করেন। কে কোন চরিত্রে উপযুক্ত হবে, সেটা ভাবেন। অমিতাভ রেজা নিশ্চয়ই তার সব কাজে আমাকে নেবেন না। তার গল্প ও চরিত্র অনুযায়ী যখন আমাকে উপযুক্ত মনে হবে, তখনই নেবেন। আরেকটা ব্যাপার হলো, পরিচালক-অভিনেতার মধ্যে কেমিস্ট্রি। তার সঙ্গে ‘আয়নাবাজি’তে কাজ করেছি, এর আগেও কাজ হয়েছে; সে হিসেবে আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া ভালো। সুতরাং চরিত্র অনুযায়ী আমি উপযুক্ত হলে বাকি বিষয়গুলোও সহজ হয়ে যায়।

চঞ্চল চৌধুরী যখন সিনেমা করেন, সেটা সফল হয়; আবার যখন ওয়েব প্ল্যাটফর্মে কাজ করেন, সেটাও দর্শকপ্রিয়তা পায়। প্রতিটি কাজে সাফল্য পাওয়ার রহস্যটা কী?

এটার কোনো রহস্য নেই। কোনো জাদুবিদ্যা নেই। আমি কোনো কাজ করার আগে বিবেচনা করি গল্পটি নতুন কিনা, চরিত্রটি ব্যতিক্রম কিনা, দর্শকদের ভালো লাগবে কিনা। এটা যেকোনো অভিনয়শিল্পীই বিবেচনা করতে পারেন। কিন্তু আমাদের অধিকাংশ শিল্পী সঠিকভাবে বাছাই করেন না। যা পায়, তাই করে ফেলেন। কিন্তু আমি যা পাই, তা-ই করি না। আমার কাছে এ পর্যন্ত হয়ত ৫০০ সিনেমার প্রস্তাব এসেছে; কিন্তু আমি করেছি মাত্র ৬টি। এটা হচ্ছে সিদ্ধান্ত। আমি আমার কাজের অভিজ্ঞতা থেকে সিদ্ধান্ত নিই যে, এই সিনেমাটি আমার করা উচিৎ হবে কিনা। ওয়েব সিরিজ আসার পর প্রায় এক-দেড়’শ সিরিজের প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু আমি সব করিনি। কোন গল্প বা কোন নির্মাতার সঙ্গে কাজ করব, এটার সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে হবে শিল্পীকেই। আমরা যদি যা পাই, তা-ই করতে থাকি, তাহলে তো ভালো-মন্দের পার্থক্যটা থাকল না। এখানে জাদু বা রহস্যের আসলে কিছুই নেই। কেবল নিজের সিদ্ধান্তটা ঠিক রাখতে হবে।

কেআই