ফাহমিদা নবী, ছবি : সংগৃহীত

বর্তমানে টিভি চ্যানেলগুলোতে অনুষ্ঠানের মান নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন তোলেন দর্শক। বিভিন্ন সময় সামাজিক মাধ্যমেও এ নিয়ে সমালোচনা হয়। আর এ বিষয়ে এবার মুখ খুলেছেন দেশের নন্দিত সংগীতশিল্পী ফাহমিদা নবী।

২৩ জানুয়ারি এ বিষয়ে ফেসবুকে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এই গায়িকা। তিনি লেখেন, ‘দর্শক বিরক্ত এবং বিমুখ বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানমালায়। খুব স্পষ্ট তাদের মতামত। শুনতে হয় আমাদেরই, তাদের কথা মন দিয়ে! উত্তর কি আর আমাদের কাছে আছে? সেটা তো বোঝাতে পারি না দর্শকদের! দিনের পর দিন ঘরে থাকতে থাকতে মানুষ একটু টিভিতে চোখ রাখতে চায় আরামের জন্য। কত আর ছোট স্ক্রিনে চোখ রাখা যায়, মোবাইলে? ভীষনভাবে পরিশীলিত এক ঘরোয়া চাহিদা এই প্যান্ডামিক সময়ে দর্শকদের। তারপর অভিযোগের এক পর্যায়ে শুনতে হয় আগের অনুষ্ঠান কত ভালো ছিল। টিভির সামনে বসতে ভালো লাগত, নাটক , গান কত চমৎকার ছিল।’

ফাহমিদা নবী লেখেন, ‘এখন তো নাটকও দেখি না, গানও শুনি না! সামনে তো আমরা আর কোনো শিল্পীর নামও বলতে পারবো না, আরো অনেক কথা! এসব যে শুনি, তা আজ নয়, বহুদিন ধরেই শুনছি, তবে ইদানিং বেশি, কারণ আমাদের হাতে প্রযুক্তির রিমোট আছে! এছাড়াও মোবাইল তো আছেই, যার যা খুশি টিকটক, আরো কত কি তাই না? আর এখন তো সবাই শিল্পী! আমাদের অস্থিরতাই এর জন্য দায়ি ‘

ফাহমিদা নবী, ছবি : সংগৃহীত 

গায়িকা প্রশ্ন তোলেন, ‘চ্যানেলগুলো কোন মতে দায়সারা অনুষ্ঠান করে, কোন পরিকল্পনা নেই, যা হচ্ছে তা হলো সময়ের চাওয়া, এটা কেন হবে? আমারও অনেক প্রশ্ন? যেহেতু ভালো কাজ একটা হলেই দর্শক হুরমুড়িয়ে টিভির সামনে বসবে, তাই বেশি প্রডাকশনে না গিয়ে, মেধা এবং রুচিশীল অনুষ্ঠানে মনোনিবেশ করাটা অত্যন্ত জরুরি। কাউকে উদ্দেশ্য করে নয়, দর্শক কি চায় তা অনুধাবন করেই কথাগুলো বলা। লাভ-ক্ষতির হিসেব কষে অন্তত; সৃষ্টিশীল কাজ হয় না!’ 

‘লুকোচুরি গল্প’ খ্যাত গায়িকা আরও লেখেন, ‘সৃষ্টিশীলতা কোনদিনই এতো সহজ নয়, অভিজ্ঞতা, চর্চা, পরিকল্পনা ছাড়া কাজ তো কখনোই ভালো হয় না, এ বিষয়টা তো সব বিষয়ের জন্যই সত্য এবং প্রযোজ্য। নুন দিয়ে ভাত খাই, তা না বলে, যদি বলি ভাতের সাথে একটু নুন লাগে, সেটা বলতে শেখাটাই শিল্প বা সৃজনশীলতা! এটা বুঝে চলা খুবই জরুরি, তা না হলে দর্শকপ্রিয়তা হারানোর অভিযোগের প্রশ্নটা উঠতো না এতো বেশি।’

ফাহমিদা নবীর মতে, ‘দর্শক চাহিদা টিভির জন্য সবসময় থাকবেই। বিষয়টাকে ইতিবাচক করেই বলি, ভালো অনুষ্ঠান হলে দর্শক চোখ রাখবেই সেই প্রডাকশনে। এখানে বিশেষভাবে বলতে চাই নতুন তরুন প্রজন্ম অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে, তারা জানে না কি করবে, কি করা দরকার, কি করলে তাদের মেধাকে সুন্দর একটা জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। তাই হয়তো অজানাতেই অস্থির হয়ে পড়ছে। চ্যানেলগুলো যদি দায়বদ্ধতার অনুসরণ করতো তাহলে নবীনরা দিশাহারা কাজগুলো করত না। তাদের পথ দেখাবার কেউ নেই। সব প্রজন্মের শিল্পীরাও ভালো কাজের স্পৃহায় ভালো মেধা মননে ভালো কাজ করবে, দর্শকও ঘুরে দাঁড়াবে। ধন্যবাদ সবাইকে।’

আরআইজে