টলিপাড়ার প্রথম সারির অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। খোলামেলা কথার দিক দিয়ে সবসময়ই সামনের সারিতে থাকেন। বছরের শেষ দিনে তিনি একমাত্র মেয়ে অন্বেষাকে হৃদয়ছোঁয়া খোলা চিঠি লিখেছেন। লিখতে বসে তিনি আবারও ব্যতিক্রমী। ২০২১ সালের সূর্য ডোবার আগে হয়তো তিনি মাতাল থাকবেন। এভাবেই তিনি আরও একবার উদযাপন করবেন, গাইবেন জীবনের গান। সে কথা প্রকাশ্যে জানাতে যেন কোনো দ্বিধা নেই বড় পর্দার ‘মৃন্ময়ী’র।

ইনস্টাগ্রামে তিনি লিখেছেন, ‘বছরের শেষ দিন এভাবেই উদযাপন করতে হয়। আমিও সেটাই করব। অতএব, সবাইকে আগাম উল্লাস!’

স্বস্তিকার স্পষ্ট দাবি, জীবন নিয়ে তার বড় কোনো আফসোস নেই। কারণ, তিনি যেমন হারিয়েছেন, তেমনই অনেক কিছু পেয়েওছেন। জীবন তাকে মেয়ে অন্বেষাকে উপহার দিয়েছে। যার ভালোবাসায় তিনি ‘ভালো মা’ না হয়ে থাকলেও সব পরিস্থিতিতে পাশে থাকার মতো ‘ভালো সঙ্গী’ বটেই।

স্বস্তিকা কেন এমন ভাবনার কথা লেখেন?

১৩ ডিসেম্বর তার বয়স হয়েছে ৪১ বছর। তার এক-দুদিন পরই একটি সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন নায়িকা। বারুইপুর রাজবাড়িতে অভিজিৎ শ্রী দাসের ‘বিজয়ার পরে’ ছবির আউটডোর শুটে ছিলেন তখন। সেসময় তিনি বলেছিলেন, বিতর্ক শব্দের বিরুদ্ধে খুব শিগগিরিই তিনি প্রতিবাদ জানাতে যাচ্ছেন।

কোন প্রসঙ্গে এ কথার সূত্রপাত? নতুন পরিচালকের প্রথম ছবিতে কাজের কারণ হিসেবে স্বস্তিকা জানিয়েছিলেন, বাংলা ছবিতে কাজ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছেন, যা করছেন তাও অনেক বেছে। ‘বিজয়ার পরে’র গল্প, পরিচালকের ব্যবহার, সহ অভিনেতা হিসেবে মমতা শঙ্কর, দীপঙ্কর দে, বিদীপ্তা চক্রবর্তী, পদ্মনাভ দাশগুপ্ত এবং মীর আফসার আলি থাকায় তিনি রাজি হয়েছেন।

তারপরই তিনি জানান, ইদানিং তিনি আর মীর মানেই অকারণ ‘বিতর্ক’। এ বিশেষ শব্দে তার যথেষ্ট আপত্তি। তিনিও বোঝেন না, তার নামের পাশে কেন বারবার এ শব্দটি বসে। স্বস্তিকার মতে, স্পষ্ট কথা বললে, কটাক্ষ, ভুল কথার প্রতিবাদ জানালে বা প্রেম প্রকাশ্যে স্বীকার করলে কিংবা সম্পর্ক ভাঙলে যদি বিতর্ক জন্ম নেয়, তা হলে তিনি সে পথে হাঁটতে রাজি।

বর্ষশেষের মতোই সেই দিনও তিনি একমাত্র মেয়ের সম্পর্কে তার অনুভূতি জানিয়েছিলেন। শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খান মাদক মামলায় বিপর্যস্ত। তার মেয়েও বড় হয়েছে। শহরের বাইরে একা থাকে। মায়ের মনে দুশ্চিন্তা ছায়া ফেলে? অভিনেত্রী নয়, ‘মা’ স্বস্তিকার দারুণ আস্থা নিজের সন্তানের ওপরে। জোর গলায় জানিয়েছিলেন, অন্বেষা সবটাই বোঝে। ফলে ওকে নিয়ে এখনও তার দুশ্চিন্তার কোনো কারণ ঘটেনি।

কথা প্রসঙ্গে উঠেছে তার সমাজসেবা, পশুপ্রেমের কথাও। রাজনৈতিক মঞ্চ পেলে তার এ কাজগুলো আরও বেশি করে প্রচারিত হবে। ভবিষ্যতে বাকি তারকাদের মতো তিনিও কি রাজনীতিতে আসবেন? স্বস্তিকার উত্তর আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, তিনি কতটা আলাদা। তার টানটান জবাব, ‘বাবা বলেছিলেন, সবাই যেটা করবে, তুমি সেটা করবে না। সবাই যখন সরে আসবে তুমি তখন পা বাড়াবে। আমি বাবার কথা অক্ষরে অক্ষরে মানি। তাই অন্য তারকারা যে দিন রাজনীতি ছাড়বেন, আমি যোগ দেব।’

বছরের শেষ মাসে বলা কথাগুলোই কি ২০২২-এর নতুন শপথ স্বস্তিকার?

এসএসএইচ