অবশেষে বহুল আলোচিত ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ গান নিয়ে বিতর্কের অবসান হলো। কপিরাইট অফিসের রেজিস্টার জাফর রাজা চৌধুরী বুধবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে জানিয়েছেন, এই গান ‘সরলপুর’ ব্যান্ডের নয়। বরং তারাই এটিকে চুরি করে নিজেদের নামে কপিরাইট করিয়েছিল।

২০২০ সালে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত সংগীতানুষ্ঠানে ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ গানটি নতুন আয়োজনে পরিবেশন করা হয়। সেখানে পার্থ বড়ুয়ার সংগীতায়োজনে গানটিতে কণ্ঠ দেন চঞ্চল চৌধুরী ও মেহের আফরোজ শাওন। রাতারাতি ভাইরাল হয়ে যায় গানটি।

তখনই ‘সরলপুর’ ব্যান্ড দাবি করে, এই গানটি তাদের নিজস্ব গান। এমনকি তারা এর কপিরাইটও করে রেখেছেন। এজন্য তারা কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন।

এই ঘটনায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় সংগীত মহলে। তাই কপিরাইট অফিস বিষয়টির তদন্ত শুরু করে। বাংলা একাডেমি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগে চিঠি দেয় তারা। তদন্ত শেষে জানা যায়, সরলপুর ব্যান্ডই গানটি চুরি করেছে।

এ বিষয়ে কপিরাইট রেজিস্টার জাফর রাজা চৌধুরী বলেন, “প্রতিটি বিভাগ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, গানটিতে ময়মনসিংহ গীতিকার জনপ্রিয় গান থেকে হুবহু বেশক’টি লাইন কপি করা হয়েছে। বিমল কুমার মুখোপাধ্যায় রচিত ‘গ্রামের ছড়া’ বইটির একটি ছড়া থেকেও প্রমাণিত হয়েছে যে সরলপুর ব্যান্ড ‘যুবতী রাধে’ গানের ৩২টি লাইনের মধ্যে ১২টি লাইন হুবহু কপি করেছে। বাকি ৫টি লাইনে এমন কিছু শব্দ তারা যোগ করেছে, যা ওই আসল গানটির ভাব ও অর্থের সঙ্গে মিলে যায়। আশুতোষ মুখার্জি রচিত একটি বইয়েও ‘তুমি হও যমুনা রাধে’ গানের সঙ্গেও ‘যুবতী রাধে’ গানের মিল পাওয়া যায়। এই চৌর্যবৃত্তির অপরাধে ‘যুবতী রাধে’ গানটির স্বত্ত্ব সরলপুর ব্যান্ডের আর থাকছে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’

উল্লেখ্য, ‘সরলপুর’ ব্যান্ড ২০১৮ সালে এই গান ‘যুবতী রাধে’ শিরোনামে কপিরাইট করেছিল। সে সময় ব্যান্ডটির প্রতিষ্ঠাতা গায়ক ও গিটার বাদক তারিকুল ইসলাম তপনকে এর গীতিকার ও সুরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয় কপিরাইট অফিস।

‘সরলপুর’ ব্যান্ড কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন করেছে। এ কারণে তাদের অর্থদণ্ড ও জেলের বিধানও রয়েছে। কিন্তু কেউ গানটির মালিকানা দাবি না করায় তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। কপিরাইট অফিস কর্তৃপক্ষ জানায়, আইন ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ ৪ লাখ টাকা ও সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং সর্বোচ্চ ২ বছরের জেল ও সর্বনিম্ন ৬ মাসের জেলের বিধান রয়েছে।

কেআই/আরআইজে