গোটা বলিউডের কাছে তিনি ভাইজান। বছর কয়েক আগেও তাকে বলা হতো মুম্বাই সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির হিট মেশিন। টানা দশটি ১০০ কোটি আয় করা সিনেমা উপহার দিয়ে বিরল রেকর্ড গড়েছেন। সার্বিক সাফল্যেও বলিউড ইতিহাসে তার নামটি প্রথম দিকে লেখা থাকবে।

তিনি সালমান খান। খ্যাতিমান চিত্রনাট্যকার সেলিম খানের বড় ছেলে। সিনেমায় সাল্লু নাম লিখিয়েছিলেন আশির দশকেই। ১৯৮৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘বিবি হো তো অ্যায়সি হ্যায়’ সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্র দিয়ে সিনেমায় আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। তবে নায়ক হিসেবে সালমানের প্রথম সিনেমা ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’ মুক্তি পায় ১৯৮৯ সালে।

ওই সিনেমায় সালমানের নায়িকা হন ভাগ্যশ্রী। সিনেমাটি অসামান্য জনপ্রিয়তা লাভ করে। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ওই সিনেমার পর টানা ছয় মাস কোনো কাজ পাননি সালমান। ওটা ছিল তার জীবনের অত্যন্ত টানাপোড়েনের সময়। এতোটাই অভাব ছিল যে, নিজের পছন্দের শার্টও কিনতে পারেননি এই সুপারস্টার।  

সম্প্রতি আবু ধাবিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আইফা অ্যাওয়ার্ডস। সেখানে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেছেন সালমান। সঞ্চালনা করতে করতেই নিজের অতীতের কথা স্মরণ করেন অভিনেতা। এ সময় আবেগপ্রবণ সালমানের চোখ ছলছল হয়ে আসে।

সালমান বলেন, “ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’র পরে ভাগ্যশ্রী সিদ্ধান্ত নিল, ও আর অভিনয় করবে না। কারণ ও বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে সিনেমাটির জন্য পুরো লাইমলাইট চলে যায় তার দিকে। টানা ছয় মাস আমার হাতে কোনও সিনেমা ছিল না। এরপরে ঈশ্বর স্বরূপ এক মানুষ, রমেশ টৌরানি আমার জীবনে আসেন।’’

নির্মাতা রমেশ টৌরানিই বেকার সালমানকে সিনেমায় নেন। ওই সিনেমার নাম ‘পাত্থর কে ফুল’। এটি অবশ্য মুক্তি পায় ১৯৯১ সালে। তবে সিনেমাটিতে কাজের সুবাদে আরও কয়েকটি প্রজেক্ট আসে সালমানের হাতে। তিনি ধীরে ধীরে হিন্দি সিনেমার নিয়মিত নায়কে পরিণত হন।

ওই বেকার সময়ে সালমানের আর্থিক অবস্থা খুবই নাজুক ছিল। সে সময় তার পাশে ছিলেন অভিনেতা সুনীল শেঠিও। সে কথা স্মরণ করে সালমান জানান, একটি ওয়ালেট ও একটি শার্ট খুব পছন্দ হয়েছিল তার। কিন্তু কেনার সামর্থ্য ছিল না। সেই শার্ট ও ওয়ালেট তাকে উপহার দিয়েছিলেন সুনীল।

নব্বই দশকে সাফল্যের পর শূন্য দশকে এসেও ব্যর্থতার মুখোমুখি হন সালমান। তখন তার দিকে এগিয়ে আসেন প্রযোজক বনি কাপুর। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সালমান খান বলেন, “সারা জীবন ধরে বনি কাপুর আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। সময় যখন ভালো যাচ্ছিল না তখন ‘ওয়ান্টেড’ সিনেমাটি তিনিই আমায় দিয়েছিলেন। এরপর থেকে আমি টানা কাজ পেয়েছিলাম।”

কেআই/আরআইজে