দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল। জাপানিরা আক্রমণ করে বার্মায়, যা অধুনা মিয়ানমার হিসেবে পরিচিত। তখন অভিনেত্রী তথা নৃত্যশিল্পী হেলেন দুধের শিশু। সে অবস্থাতেই জাপানি সৈনিকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মায়ের সঙ্গে নিয়ে ভারতে আসেন ছোট্ট হেলেন। যদিও এর জন্য বড় মূল্য দিতে হয়েছিল তার পরিবারকে। তবু প্রাণে বেঁচেছিলেন তিনি। বহু বছর পর সৎ ছেলে আরবাজের কাছে সে ঘটনা বলেছেন অভিনেত্রী।

আরবাজের নতুন চ্যাট শোতে হেলেন জানান, সে সময় ৩০০ থেকে সাড়ে ৩৫০ পরিবার রিফিউজি হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। দেশ ছাড়ার চেষ্টা চালিয়ে বার্মা বিমানবন্দরে মা ও দাদার সঙ্গে এসে পৌঁছান হেলেন। ভারতে আসার এটিই ছিল শেষ বিমান। কিন্তু বিমানবন্দরে অতর্কিত হামলা চালায় জাপানিরা। বিমানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তাদের আর বিমান ধরা হয় না। কিন্তু প্রাণে তো বাঁচতে হবে।

হেলেনের কথায়, পুরোটা মনে নেই, শুধু মনে আছে বিমানবন্দরে মা আমাদের জড়িয়ে ছিল। মা বলেছিল আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে। আমার হাঁটতে শুরু করলাম। বার্মার সীমা ছাড়িয়ে এলাম। কিন্তু মিয়ানমার থেকে হেঁটে ভারতে প্রবেশ মুখের কথা ছিল না। ৯ মাস ধরে শুধু হেঁটেই যান হেলেন ও তার পরিবার। সে সময় তাঁর মা অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। সেই সন্তান গর্ভেই নষ্ট হয়ে যায়। ৯ মাস পায়ে হাঁটার পর অবশেষে আসাম পেরিয়ে কলকাতায় আসেন তারা। শুরু হয় আরও কঠিন এক জীবন। কোরাস নৃত্যশিল্পীদের দলে কিছু সময় পর নাম লেখান হেলেন। কাজ পেতে থাকেন ছোট ছোট চরিত্রে। ক্রমে পরিচিত বাড়ে। ডাক আসে মুম্বাই থেকে। আইটেম ড্যান্সার হিসেবে পরিচিতি পেতে শুরু করেন।

তবে স্বল্প পোশাকে আইটেম ডান্সের জন্য সে সময় কম সমালোচনার মুখে পড়তে হয়নি তাকে। অনেকেই তার চরিত্রে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। হেলেন প্রেমে পড়েন সেলিম খানের। কিন্তু সেলিম তখন বিবাহিত। রয়েছে সালমান, আরবাজসহ চার সন্তানও। যদিও শরিয়ৎ অনুযায়ী হেলেনকে বিয়ে করেন সেলিম। কিন্তু অনেকেই তাকে সে সময় ‘ঘরভাঙানি’ আখ্যাও দেয়। সে সব অতীত। আজ হেলেন খান পরিবারের সঙ্গেই বাস করেন। সালমান খান থেকে আরবাজ খান– সবার সঙ্গেই বেশ ভালো সম্পর্ক তার।

/এসএসএইচ/