উপমহাদেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী অরিজিৎ সিং। হিন্দি-বাংলা উভয় সিনেমার গানেই তার বিচরণ। বর্তমানে প্লেব্যাক জগতের শীর্ষে রয়েছেন তিনি। অরিজিতের কণ্ঠে মাতোয়ারা সবাই।

ভারতের জনপ্রিয় এ সংগীতশিল্পী বেশির ভাগ সময়ই ব্যস্ত থাকেন দেশবিদেশে স্টেজ শো করায়। তবু সুযোগ পেলেই বার বার ছুটে যান আপন ভিটেমাটির টানে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে।

তারকা হিসেবে কোনো অহংকার নয়, বরং ফিল্মি দুনিয়ার চাকচিক্য থেকে শত হাত দূরে থাকতে পছন্দ করেন তিনি। তাই বলে সম্পত্তির পরিমাণ মোটেও কম নয় অরিজিতের। এদিক থেকে তিনি ছাড়িয়ে যেতে পারেন বড় বড় বলিউড তারকাদেরও।

দেশবিদেশে শো করে, সিনেমার গান গেয়ে যে অর্থ উপার্জন করেন তা কীভাবে ব্যয় করেন অরিজিৎ? সূত্রের দাবি, তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৫৫ কোটি টাকার। শোনা যায়, গানপ্রতি তিনি নেন ১৫ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এছাড়াও রয়েছে লাইভ শো। শোপ্রতি যে পারিশ্রমিক নেন তাতে কিছুটা তারতম্য হলেও মোটামুটি কোটির ওপরেই থাকে সেই অঙ্ক। অনেকেই হয়ত জানতে আগ্রহী, অর্জিত এই বিপুল পরিমাণ অর্থ গায়ক খরচ করেন কীভাবে? জীবনযাপনের ক্ষেত্রেও ভীষণ সাদামাটা থাকতেই পছন্দ করেন অরিজিৎ। বড় মাপের গায়ক, কিন্তু দামি গাড়ি নেই। সাধারণ মধ্যবিত্তদের মতোই তার বিচরণ। যদিও সম্প্রতি ম্যানেজারের পরামর্শে বড় গাড়ি কিনতে বাধ্য হয়েছেন অরিজিৎ।

কয়েক মাস আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেলে ও স্ত্রীসহ অরিজিতের কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল। তাতে জিয়াগঞ্জের মাউন্ট লিটেরা জি স্কুলের গেটের সামনে দেখা যায় তাকে। ছেলেকে মুম্বাই বা কলকাতার কোনো স্কুলে না পড়িয়ে নিজের জেলার স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন তিনি। আবার অন্য পাঁচ জন অভিভাবকের সঙ্গেই স্কুলের বাইরে অপেক্ষা করেন। এতটাই মাটির কাছাকাছি এই গায়ক। নিজের আয়ের অর্থ কোনো বিলাসবহুল জীবনযাপনে নয়, বরং সমাজের কল্যাণেই খরচ করেন অরিজিৎ।

শৈশবে যে স্কুলে পড়েছেন, সেই জিয়াগঞ্জ রাজা বিজয় সিংহ বিদ্যামন্দিরের সভাপতির দায়িত্ব নেন অরিজিৎ। স্কুলের উন্নয়ন বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি। সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে অযত্নে পড়েছিল স্কুলের খেলার মাঠ। অরিজিতের তত্ত্বাবধানে সেই মাঠ ঠিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে সেই মাঠ।

এছাড়াও অরিজিতের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে। জিয়াগঞ্জে উন্নত হাসপাতাল করার চিন্তাভাবনাও রয়েছে তার। মুর্শিদাবাদে করোনার সময় চিকিৎসার পরিকাঠামো আরও মজবুত করতে অর্থ সাহায্যও করেছেন ‘কবীরা’র গায়ক। এছাড়াও অরিজিৎ তার উপার্জনের একটা বড় অংশ জিয়াগঞ্জের হাসপাতালের উন্নয়নে, দুঃস্থ শিশুদের হার্টের চিকিৎসায় এবং গানের স্কুল নির্মাণে ব্যয় করেন। এছাড়াও জিয়াগঞ্জে বিনামূল্য ইংরেজি শিক্ষার কোচিং চালু করেছেন। বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগেও শামিল হন তিনি।

/এসএসএইচ/