বর্তমান সময়ে পশুপ্রেমীর সংখ্যা অনেক কম। সেজন্য পশুরা কিছু মুনাফা লোভী স্বার্থান্বেষী মানুষের ক্যাশবাক্স ভারী করার ‘বস্তু’ হয়ে ওঠেছে। এমন অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অস্ত্র ‘পোচার’ সিরিজ।

বছরের পর বছর ধরে মুনাফা লোভী মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের জন্য শত শত হাতির নির্মম পরিণতি ঘটে। হাতির দাঁত পাচার ভারতে নতুন ঘটনা নয়। এছাড়া সচেতনতা বা অবহেলার কারণেও অনেক হাতির মৃত্যু ঘটেছে। 

আন্তর্জাতিক বাজারে কখনও তাদের চামড়া আবার কখনও বা তাদের দাঁত-সিং বিক্রি হয়েছে কোটি কোটি টাকায়। আমাজন প্রাইম ভিডিও প্ল্যাটফর্মে রিলিজ করা ‘পোচার’ সিরিজেও সমাজের সেই নৃশংস রূপ তুলে ধরেছেন পরিচালক রিচি মেহেতা। যা কিছুটা হলেও প্রশাসনের ‘ঢিলেমিকে’ও বেআব্রু করেছে।

২০১৫ সালে ‘ঈশ্বরের আপন দেশ’ কেরালাতে চোরাশিকারিদের একটা বড় ব্যাকেট ধরা পড়ে প্রায় ৯ মাসের তদন্ত, ছোটাছুটির জেরে। সেই বাস্তব ঘটনা অবলম্বনেই এমি পুরস্কার জয়ী রিচি মেহেতা চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন। 
আটটি পর্বের সিরিজ। একেকটার দৈর্ঘ্যও ৪০ মিনিটের বেশি। 

এত বেশি সময়ের হলেও ‘স্লো কুক’ সিরিজ ‘পোচার’ দেখতে একঘেয়ে লাগে না। কারণ এর সবথেকে বড় প্লাস পয়েন্ট সিনেম্যাটোগ্রাফি এবং প্রতিটা দৃশ্যের গভীরতা। একেকটা সংলাপও গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরাধাম যে মানুষ নামক জীবের পাশাপাশি পশুদেরও সমান ঠিকানা, সেই বিষয়টি বেশ কিছু দৃশ্যে জন্তুদের সিগনিফিকেন্টভাবে দেখিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন পরিচালক। এককথায়, এই সিরিজে কোনও অতিরঞ্জিত বিষয় নেই। একেবারে অথেন্টিক। নিমিশা সাজাইয়ান, রোশান ম্যাথিউ, দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য, কানি কুসরুতি প্রত্যেকের অভিনয় দারুণ।

এরকম একটা বিষয়কে দর্শকদের প্লেটে রাখার জন্য আলিয়া ভাটও যেরকম উৎসাহ দেখিয়েছেন, তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। সিংহভাগ প্রযোজকরা যখন বক্স অফিসের নম্বর নিয়ে মাথা ঘামান কিংবা বক্স অফিসের ইঁদুর দৌড়ে শামিল হন, তখন আলিয়া ভাট কিন্তু চিরাচরিত পথে হাঁটলেন না। বরং প্রযোজক হিসেবে কন্টেন্টকেই রাজার সিংহাসনে বসিয়েছেন আলিয়া। 

তাঁর প্রযোজনা সংস্থা এটারনাল সানসাইন প্রোডাকশন হাউজের ব্যানারে তৈরি হয়েছে ‘পোচার’-এর মতো সিরিজ। যা কিনা বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে তৈরি। একজন পশুপ্রেমী হওয়ার সুবাদে দেশের হাতিমৃত্যু ভাঁজ ফেলেছে আলিয়া ভাটের কপালেও। আর সেই ভাবনা থেকেই সমাজ, প্রশাসনকে নাড়া দিতে তিনি টাকা ঢেলেছেন ডকু সিরিজ ‘পোচার’-এর নেপথ্যে।

এমএসএ