রাজস্থানের সাবেক চার বারের বিধায়ক এবং দুই বারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী বীণা কাকে। ওঠাপড়া কম হয়নি তার জীবনে। নানা রূপেই দেখা দিয়েছেন বীণা। কখনও রেডিয়োর অনুষ্ঠানে সঞ্চালক, কখনও বা ইউটিউবে পরিবেশ বা ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা প্রচারে ব্যস্ত তিনি। এক সময় ফটোগ্রাফির নেশায় মেতেছিলেন। উর্দু কবিতা বা রাজস্থানি প্রবাদের সংগ্রহকে জনমানসে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজেও মন দিয়েছেন।

জানা যায়, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক এম আর ভাসিনের ছয় সন্তানের মধ্যে ১৯৫৪ সালে বীণার জন্ম রাজস্থানের ভারতপুরে। স্নাতকোত্তর শেষে বিয়েতে আবদ্ধ হোন ভারত কাকের সঙ্গে। তবে সে বিয়ে টেকেনি।

ভারতের কাকের সঙ্গে বিয়ের সূত্রেই নেহরু পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে বীণার। বিয়ের পর রাজনীতির আঙিনায় প্রবেশ করেন। কংগ্রেসের কর্মী হিসেবেই আশির দশকে রাজনৈতিক জীবন শুরু তার। এক সময় পালি জেলায় মহিলা কংগ্রেসের সভাপতিও হোন তিনি।

১৯৮৫ সালে কংগ্রেসের হয়ে বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হন বীণা। ১৯৯০ সালের নির্বাচনে মাত্র ২৭ ভোটে হেরে যান তিনি। তবে ৯৩ ও ৯৮-এ টানা দুই বার সুমেরপুরে জয় লাভ করেন। ২০০৩-এর নির্বাচনে ফের হার। ২০০৮ সালের জিতলেও ২০১৩-র নির্বাচনে আবার হারে মুখে দেখেন বীণা।

রাজনীতিক হিসেবে বীণার উত্থান কম নাটকীয় নয়। রাজস্থান সরকারে ক্যাবিনেটে থেকে সামলেছেন পর্যটন, বন, নারী ও শিশুকল্যাণ দফতর। শিল্প ও সংস্কৃতি, পুরাতত্ত্ব দফতরের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি।

কংগ্রেস সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দফতর সামলালেও ২০০৩ সালে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর সুমেরপুর আসনে বীণাকে টিকিট দিতে রাজি হননি প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। সে সময়ই বীণার কাছে অভাবনীয় সুযোগ আসে।

রাজস্থানের ক্যাবিনেট মন্ত্রী হলেও রাজনীতিক নয়, নতুন প্রজন্মের অনেকের কাছে বীণার অন্য পরিচয় রয়েছে। তিনি সালমান খানের ‘মা’! তা আসলে বলিউডের পর্দায়।

বরাবরই অভিনয়ের ঝোঁক ছিল বীণা। ফলে সালমানের প্রস্তাব প্রায় একবাক্যে মেনে নিয়েছিলেন তিনি। অভিনয় জগতে এই কংগ্রেস নেত্রীর যাত্রা শুরু হয় ২০০৫ সালে।

২০০৫ সালে বীণার অভিষেক ডেভিড ধাওয়ানের ফিল্মে। ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিঁউ কিয়া?’-তে সালমানের মায়ের চরিত্রে। এরপর ‘গড তুস্‌সি গ্রেট হো’, ‘নান্‌হে জয়সলমের’, ‘দুলহা মিল গয়া’, ‘সালাম-ই-ইশ্ক : আ ট্রিবিউট টু লভ’, ‘জানিসার’— সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি।

অভিনয় ছাড়াও কবিতা নিয়ে বীণার আগ্রহ কম নয়। ক্যানসার জয়ী বীণা নিজের কাহিনী ছড়িয়ে দিতে ইউটিউবের সদ্ব্যবহার করছেন। তার কবিতা যাতে নতুন প্রজন্মের আগ্রহ জন্মায়, সেজন্য কাজ শুরু করেছেন তিনি।

এমএইচএস