দেশের চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৮টি সংগঠন এক হয়ে বয়কট করেছে চিত্রনায়ক জায়েদ খানকে। শনিবার (৫ মার্চ) একটি লিখিত বিবৃতির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। সেখানে আহ্বায়ক হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান।

বয়কটের ঘোষণা যখন দেওয়া হয়, তখন জায়েদ খান ছিলেন একটি গণমাধ্যমের লাইভে। সেখানেই তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান। জায়েদ বলেন, ‘এটা তো আমি আগেই বলেছিলাম, কোর্টের রায় যদি হয়, আমি যদি জয়লাভ করি, তাহলে কিছু লোক এটা করবে। এ পরিকল্পনা আগে থেকেই চলছে, এটা আসলে প্রি-প্ল্যানড।’

গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছিল চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। সেদিন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো সংগঠনের সদস্যকে এফডিসিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এই ঘটনায় জায়েদ খানের প্রভাব ছিল বলে প্রমাণ পেয়েছে ১৮ সংগঠনের জোট চলচ্চিত্র পরিবার।

তবে এই কারণকে হাস্যকর বলে দাবি করলেন জায়েদ খান। তার ভাষ্য, ‘যে কারণটা বলা হয়েছে সেটা অন্যায়। এটা এখন হাস্যকর বিষয় হয়ে গেছে, এই বয়কট, ওই বয়কট। সমস্যার সমাধান না করে সমস্যার দিকে ছুটে চলা। যে কারণ দেয়া হয়েছে, শিল্পী সমিতির নির্বাচনের দিন আমি ঢুকতে দিইনি, সেটা এতদিন পর কেন এলো? সেখানে তো আমার কোনো দায়ভার নেই।’

সোহানুর রহমান সোহানের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে জায়েদ খান আরও বলেন, ‘যে চিঠিতে আমাকে বয়কটের আদেশ দেয়া হয়েছে, সে চিঠিতে যার স্বাক্ষর আছে, সেই সোহানুর রহমান সোহানই তো এফিডিসির এমডির কাছে বলে এসেছেন যে, কেউ আসবেন না, আপনি নির্বাচনের ডেটটা দেন। আমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান দায়িত্ব নিলাম, আমরা কেউ আসব না। তারপর তেজগাঁও বিভাগের যিনি উপ-পুলিশ কমিশনার, তার কাছে দুই প্যানেলের পাঁচজন পাঁচজন ১০ জন মিলে নির্বাচন কমিশনারসহ মিটিং করে এসেছি যে এফডিসির এমডি, নির্বাচন কমিশনার মিলে যে সিদ্ধান্ত নেন, আমরা মেনে নেব। তারপরও আমার ওপর কেন দোষ চাপানো হবে। এতগুলো মানুষকে ঢুকতে না দেয়ার আমি কে, আমি তো একজন প্রার্থীমাত্র। এটা কোনো কারণই হতে পারে না।’

অভিযোগের ব্যাপারে তার সঙ্গে কোনো আলোচনাও করেনি বলে জানিয়েছেন জায়েদ খান। তিনি বলেন, ‘১৮ সংগঠনের মধ্যে তো শিল্পী সমিতিও আছে। ওনারা কি শিল্পী সমিতির প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপ করেছেন? শিল্পী সমিতির কেবিনেট আছে, কাঞ্চন সাহেব, ডিপজল সাহেব, রুবেল সাহেব, কারও সঙ্গে কি আলাপ করেছেন। আমি কাউকে ঢুকতে দিইনি- এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমাকে তো তারা কোনো কিছু জিজ্ঞেস করেনি। তাদের কাছে তথ্য-প্রমাণ কিছুই নেই। মুখে মুখে যা মনে হলো পাঁচ-সাতজন মিলে তাই করছে।’

উল্লেখ্য, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে সাধারণ সম্পাদক পদে জয়লাভ করেন জায়েদ খান। এরপর প্রতিদ্বন্দ্বী নিপুণের দাবিতে পুনরায় ভোট গণনা করা হয়। তাতেও জয় পান জায়েদ।

পরবর্তীতে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ তোলেন নিপুণ। এ নিয়ে হয়েছে বিস্তর সমালোচনা, বিতর্ক। অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে জানিয়ে জায়েদের প্রার্থীতা বাতিল করে নির্বাচনের আপিল বোর্ড। কিন্তু হাল ছাড়েননি গত দুই মেয়াদের সাধারণ সম্পাদক। তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। সবশেষে আদালতের নির্দেশে পদ ফিরে পান এই নায়ক। যদিও আদালতের সর্বশেষ রায়ের বিরুদ্ধেও আপিল করেছেন নিপুণ।

কেআই