ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণি পর্দার ঝলমলে জীবনের বাইরে একজন সুন্দর মনের মানুষও। তার মানবিকবোধ প্রশংসিত হয়েছে বারংবার। বিভিন্ন সময় অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেকে অনন্যা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন তিনি।

কখনো প্রতিবন্ধী, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কাছে ছুটে গিয়েছেন, সহায়তা দিয়েছেন, আবার কখনো এফডিসিতে কোরবানি দিয়ে অসহায় কলাকুশলীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন পরী।

এই নায়িকা এবার দুই মাস বয়সী শিশু সহশিল্পীকে নিজের একটি নাকফুল উপহার দিয়েছেন। যা কিনা তিনি বিয়ের সময় উপহার পেয়েছিলেন স্বামী শরীফুল রাজের কাছ থেকে।

অরণ্য আনোয়ার পরিচালিত ‘মা’ সিনেমার শুটিংয়ে শুক্রবার (১১ মার্চ) এই অনন্য নজির স্থাপন করেন পরীমণি। সিনেমায় ওই শিশু পরীমণির ছেলের চরিত্রে অভিনয় করেছে। শুটিংয়ে শিশুটির মায়ায় জড়িয়ে পড়া পরী বিয়ের সময় রাজের কাছ থেকে পাওয়া ওই নাকফুলটি উপহার হিসেবে তার মায়ের কাছে দিয়ে আসেন।  

পরে সিনেমার নির্মাতা অরণ্য আনোয়ার ফেসবুকে পোস্ট করে ঘটনাটি শেয়ার করেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশ হচ্ছে। পরী ওই শিশুকে নাকফুল উপহার দিলেও কেউ লিখছেন তিনি নিজের এনগেজমেন্টের আংটি উপহার দিয়েছেন। কেউ বা লিখছেন অন্য কিছু।

তবে পরীমণি বলছেন, সোনার আংটি কিংবা নাকফুল এখানে মুখ্য নয়। এখানে মূল বিষয় হলো ভালোবাসা, মাতৃত্ব, মমতা। সিনেমার চরিত্রে হলেও তিনি ওই শিশুর মায়ায় জড়িয়ে যান। শিশুটি যাতে বড় হয়ে কখনো এই মায়ের কথা স্মরণ করতে পারে সে জন্যই তাকে এই উপহারটি দেন।

ঢাকা পোস্টকে পরীমণি বলেন, “ওটা আংটি নয়, ওটা ছিল নাকফুল। যেটা পরে আমি ‘মা’ সিনেমার শুটিং করেছি।”

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পরীমণি বলেন, ‘আমার বিয়ের সময় রাজ আমাকে দুইটা সোনার নাকফুল দিয়েছিল। একটা আমি বিয়েতে পরেছি। আরেকটা দেখলাম এই সিনেমার (মা) চরিত্রের সঙ্গে যাচ্ছে। তাই ওটা শুটিংয়ে পরলাম। বড় হয়ে বাচ্চাটি যাতে স্মরণ করতে পারে তাই তার মায়ের কাছে আমার করা মা চরিত্রের একটা সুন্দর স্মৃতি রেখে আসলাম। তার মা বলেছে ছেলেটা বড় হলে তার বিয়ের সময় এটা ছেলের বউকে দেবে। ভাবুন, এত বছর এই স্মৃতিটা কত যত্নে থাকবে।’

এই নায়িকা আরও যোগ করেন, ‘আমার এই ইমোশনটাই কেউ বুঝল না। শুধু সোনার রিং, সোনার আংটি নিয়ে লাফাচ্ছে। আসলে সোনার রিং, কিংবা সোনার আংটি বলে কথা নয়। মায়ের নাফকুল, এটা তো বড় ধরনের একটা ইমোশন বাঙালিদের জন্য। আমার মনে হলো, আমি যেহেতু তার মায়ের চরিত্র অভিনয় করেছি আমার একটা চিহ্ন তার মায়ের কাছে থাকুক। তাই ওই মায়ের কাছে নাকফুলটা খুলে দিয়ে এসেছি।’

পরী আরও বলেন, ‘চরিত্রে মা হলেও আমি তো শিশুটির মা হয়েছি। যাতে বড় হয়ে কখনো বলতে পারে তার আরেক মা তাকে এই উপহারটি দিয়েছেন। ব্যাপারটা আসলে এরকম।’

উল্লেখ্য, শুক্রবার ২০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে পরীমণি ও রাজ অভিনীত সিনেমা ‘গুণিন’। আগের সপ্তাহে মুক্তি পায় নায়িকার আরেক সিনেমা ‘মুখোশ’। আজ বিকেলে ও সন্ধ্যায় স্টার সিনেপ্লেক্সে দর্শকদের সঙ্গে দুটি সিনেমাই দেখবেন বলে জানিয়েছেন পরীমণি।

আরআইজে