ঢাকাই সিনেমার অন্যতম সফল ও কালজয়ী নায়ক জসিম। আশি ও নব্বই দশকে তিনি দাপটের সঙ্গে রূপালি পর্দা মাতিয়েছিলেন। একের পর এক ব্যবসাসফল সিনেমা দিয়ে নিজেকে সফলতম নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তাকে দেশের অ্যাকশন ঘরানার সিনেমার পথিকৃৎ বিবেচনা করা হয়।

আজ ৮ অক্টোবর জসিমের চলে যাওয়ার দিন। ১৯৯৮ সালের এই দিনে সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের কাঁদিয়ে চিরতরে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি।

১৯৫০ সালের ১৪ আগস্ট ঢাকার নবাবগঞ্জের বক্সনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন জসিম। তার পুরো নাম আবুল খায়ের জসিম উদ্দিন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ২ নম্বর সেক্টরে মেজর হায়দারের নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছিলেন তিনি। তার অভিনীত প্রথম সিনেমার নাম 'দেবর'। তবে নায়ক হিসেবে রুপালি পর্দায় তার অভিষেক 'মোকাবেলা' সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে।

চলচ্চিত্রের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের জীবনে তিনি নায়ক হিসেবে ১২০টিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। খলনায়কের ভূমিকাতেও তাকে অভিনয় করতে দেখা গেছে। ৭০টিরও বেশি সিনেমায় তিনি খলনায়ক হয়ে অভিনয় করেছেন।

ব্যক্তিগত জীবনে নায়ক জসিম প্রথম বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন এ দেশের খ্যাতিমান নায়িকা সুচরিতার সঙ্গে। এরপর তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন বাংলাদেশের আরেক নায়িকা নাসরিনকে। নায়িকা নাসরিন বাংলাদেশের প্রথম সিনেমা 'মুখ ও মুখোশ'র নায়িকা পূর্ণিমা সেনগুপ্তার মেয়ে।

জসিম অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে-‘তুফান’, ‘জবাব’, ‘নাগ নাগিনী’, ‘বদলা’, ‘বারুদ’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘লালু মাস্তান’, ‘নবাবজাদা’, ‘অভিযান’, ‘কালিয়া’, ‘বাংলার নায়ক’, ‘গরিবের ওস্তাদ’, ‘ভাইবোন’, ‘মেয়েরাও মানুষ’, ‘পরিবার’, ‘রাজা বাবু’, ‘বুকের ধন’, ‘স্বামী কেন আসামী’, ‘লাল গোলাপ’, ‘দাগী’, ‘টাইগার’, ‘হাবিলদার’, ‘ভালোবাসার ঘর’ প্রভৃতি। 

ঢাকাই সিনেমার নায়কদের মধ্যে জসিমই একমাত্র নায়ক, যার নামে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন ‘বিএফডিসি’তে একটি ফ্লোরের নামকরণ করা হয়েছে।

১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে মারা যান নায়ক জমিস। রেখে যান তিন পুত্রসন্তান সামি, রাতুল ও রাহুলকে।

আরআইজে