দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। তার দর্শকপ্রিয়তার ঢেউ ‘হাওয়া’র বেগে এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও পৌঁছে গেছে। অথচ একসময়ের ছোট্ট চঞ্চল ছিলেন নামের মতোই দুরন্ত। বাবার নামেই পরিচিতি পেতেন তখন।

কথা ছিল, কলকাতায় ‘হাওয়া’ সিনেমার মুক্তি উপলক্ষে হাজির থাকবেন সংবাদ সম্মেলনে। কিন্তু তা আর হলো কই? যেখানে তার কণ্ঠে উচ্ছ্বাস ঝরে পড়ার কথা সেখানে শোনা যাচ্ছে উৎকণ্ঠার সুর। কলকাতায় উড়ে যাওয়ার বদলে বাবার শিয়রে বসে থাকাটাই শ্রেয়তর ভাবছেন এই অভিনেতা। চঞ্চল জানালেন, ভালো নেই তিনি। বাবা-মাকে হাসপাতালের বিছানায় রেখে কোনো সন্তানই ভালো থাকতে পারে না।

৯০ বছর বয়সী বাবা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন। পাশে বসে বিষণ্ণ মনে চঞ্চল চলে গেলেন তার বাল্যকালে। জপলেন বাড়ির উঠোনের স্কুলের কথা, প্রধান শিক্ষক বাবার কথা। যার কারণে, স্কুলের মাঠ, গাছপালা, স্কুল ঘর,বই-পত্র সব কিছুকেই নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি ভাবতেন চঞ্চল।

বাবার সঙ্গে চঞ্চল চৌধুরী

তার স্মৃতিচারণায়, ‘ছোটবেলায় যতটা ভালো ছাত্র ছিলাম,তার চেয়ে অনেক বেশি দুরন্ত ছিলাম। যদিও রোল নম্বর সব সময়ই এক, দুই, তিনের মধ্যেই থাকত। একজন সৎ এবং স্বনামধন্য শিক্ষক হিসেবে আমার বাবাকে এলাকার সবাই একনামে চিনত, এখনও চেনে। যেকোনো জায়গায় গেলে বাবার ছেলে হিসেবেই বেশি সমাদর পেতাম। কয়েক বছর আগ পর্যন্তও দুলাল মাস্টারের সন্তান হিসেবেই এলাকায় পরিচিত হতাম।’

এরপর যখন অভিনেতা হিসেবে পুরো দুনিয়া তাকে চিনল, তখন দুলাল মাস্টার থেকে হয়ে গেলেন চঞ্চলের বাবা। অভিনেতা ছেলের জানার খুব ইচ্ছে ছিল, শিক্ষক বাবার কেমন অনুভূতি হয় নতুন এই পরিচয়ে? সেদিন বাবা কোনো জবাব দেননি শুধু ভেজা চোখে জানিয়ে দিলেন তিনি খুবই গর্বিত।

চঞ্চলের বর্ণনায়, ‘তার সেই গর্বিত মুখটা দেখে আমার চোখ দুটোও ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। সন্তানের সকল সফলতায় বাবা মায়ের যে কি শান্তি, কি আনন্দ, তা আমি দেখেছি।’

কেএইচটি