বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। দীর্ঘদিন ধরে নানান বাহানায় সেন্সরে আটকে আছে তার ‘শনিবার বিকেল’ ছবিটি। এ নিয়ে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে পরিচালকের মনে। কিছুটা আভাস পাওয়া গেল তার গতকালকের ফেসবুক পোস্টে।

রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্টে এক নাতিদীর্ঘ বক্তব্যের অবতারণা করেন ফারুকী। তিনি লেখেন, ‘আমরা এমন এক সময় নির্মাণ করছি সবাই মিলে, যখন দেশে কারো সিনেমা সেন্সর সার্টিফিকেট পেলে অন্যরা অভিনন্দন জানায়। যেন সিনেমার সেন্সর পাওয়াও এক বিরাট সাফল্য। ভাবেন অবস্থা।’

তার কথায়, ‘আমরা এমন এক সময় নির্মাণ করছি, অন্যায়ভাবে আমাদের সিনেমা আটকে দিলেও আমরা এত মৃদু কণ্ঠে কথা বলতে চাই যেন মান্যবরেরা মাইন্ড না করেন। যেন সিনেমা আটকানোটা অন্যায় না, মান্যবরকে বিরক্ত করাটা অন্যায়।’

বিপ্লব চাইলে কোনো ধরনের আপস নয় বরং নিজের প্রাপ্য অধিকার ছিনিয়ে আনতে হবে। নির্মাতাদের নিজেদের পরিচয় সমুন্নত রাখার প্রয়াসও ব্যক্ত করেন ফারুকী।

তার ভাষায়, “আমাদের ফিল্মমেকার এবং শিল্পীদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমরা মহাকালের কাছে নিজেদের কোন পরিচয় রেখে যেতে চাই। আমরা কি চাই ভবিষ্যৎ আমাদের চিহ্নিত করুক এই পরিচয়ে যে, ‘ইহারা ছিলেন একদল ফিল্মমেকার যাহারা নিরাপদ বিপ্লব চাহিয়াছিল?’ যদি তা না চাই, তাহলে আমাদেরকে যার যার জায়গা থেকে বলতে হবে, গল্প বলার স্বাধীনতা চাই। কথা বলার স্বাধীনতা চাই। কোনো কিছুর বিনিময়েই এটা নেগোশিয়েট করা যাবে না!”

সবশেষে ঐক্যমতের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের মত ভিন্ন হতে পারে, ভোটের বাজারে আমরা যার যাকে পছন্দ তার পক্ষে কাজ করতে পারি। কিন্তু গল্প বলবার স্বাধীনতায় যদি কেউ হাত দেয়, আমাদের এক হয়ে চিৎকার করতে হবে।’

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছিল, ‘শনিবার বিকেল’ ছবির আপত্তির জায়গাগুলো চিহ্নিত করে সংশোধনের একটি তালিকা নির্মাতাদের দেওয়া হবে। এখনও পর্যন্ত সেই চিঠি পাননি বলে ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন ছবিটির নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

কেএইচটি