‘হাওয়া’ সিনেমার মধ্য দিয়ে প্রায় এক যুগ পর চালু হলো ‘রাজ তিলক’ সিনেমা হল। শুক্রবার (১৭ মার্চ) বিকেলে রাজশাহী নগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালী বাজারে অবস্থিত সিনেমা হলটি অনুষ্ঠনিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনীর দিনে ‘হাওয়া’ সিনেমাটি চালানো হয়। প্রথম দিন হওয়ায় দর্শকের উপস্থিতি কম ছিল। তবে সিনেমা হল চালুর খবর আরও জানাজানি হলে দর্শক বাড়ার প্রত্যাশা হল মালিকের।

সন্ধ্যায় সিনেমা দেখা শেষে কলেজ ছাত্র সাইফুর রহমান বলেন, ‘আমি কোনো দিন হলে সিনেমা দেখিনি। আগে মায়ের কাছে অনেক গল্প শুনেছি সিনেমা হলের। এই প্রথম হলে এসে সিনেমা দেখলাম। হলের বড় পর্দায় সিনেমা দেখতে এত ভালো লাগে আগে জানতাম না। অনেক মজা লেগেছে। ইউটিউব ছাড়া অন্য মাধ্যমে অনেক সিনেমা দেখেছি। তেমন মজা লাগেনি।’

অপর দর্শক সমির হোসেন বলেন, “১২-১৩ বছর আগে কাটাখালী (রাজ তিলক) হলে ‘মনপুরা’ সিনেমা দেখেছিলাম। তারপর ‘কমন জেন্ডার’ সিনেমা আসে। এই সিনেমা দেখা হয়নি। তার আগেই হল বন্ধ হয়ে যায়। এর মাঝে একবার নওহাটার সিনেমা হলে এক দিন ছবি (সিনেমা) দেখেছি। ওই ছবি ভালো লাগেনি। ছবির নামও মনে নাই। গত কয়েক দিন থেকে কাটাখালির ‘রাজ তিলক’ সিনেমা হল চালুর মাইকিং এলাকায় এলাকায় করা হয়েছে। ‘হাওয়া’ সিনেমা আগে থেকেই দেখার ইচ্ছা ছিল। আজ দেখলাম।”

রাজ তিলক সিনেমা হলের প্রোডাকশন ম্যানেজার সাজ্জাদ হোসেন সাগর বলেন, ‘দীর্ঘ ১১ বছর পরে সিনেমা হলটি চালু হওয়ায় রাজশাহীবাসীর বিনোদনের নতুন দুয়ার খুলেছে। এই সিনেমা হলটি চালু করা এক ধরনের চ্যালেঞ্জ ছিল। হলটি চালু করতে নতুন করে আবার কাগজপত্র করতে হয়েছে। একই সাথে নতুন করে সংস্কার ও সাজসজ্জার কাজ করতে হয়েছে। দীর্ঘ সাড়ে তিন থেকে চার মাস কাজ করে হলটি চালুর উপযোগী করা হয়।’

তার কথায়, ‘দীর্ঘদিন থেকে হলটি বন্ধ ছিল। তারপরও আজ প্রথম দিনে ভালো দর্শক হয়েছে। আশা করছি আগামীতে ভালো চলবে। হলে টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে ৭০, ১০০ ও ১৫০ টাকা।’

রাজশাহী ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক জাবীদ অপু ঢাকা পোস্টকে বলেন, “রাজশাহী নগরী সিনেমা হল শূন্য হয়ে গিয়েছিল। নগরীর মানুষের হলে সিনেমা দেখার আশা পূরণ হচ্ছে। মানুষ সিনেমা হলে গিয়ে আনন্দ উপভোগ করতে পারছে। ‘হাওয়া’ খুব পপুলার একটা সিনেমা। আশা করছি, রাজশাহীর রাজ তিলক সিনেমা হলে সিনেমাটি ভালো ব্যবসা করবে।”

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে ‘কমন জেন্ডার’ সিনেমা চলাকালে শহরের অদূরে পবার কাটাখালী বাজারের পুরোনো রাজ তিলক হলটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন রুম্মান হলটি কিনে নেন। কিন্তু তিনিও হলটি চালু করতে পারেননি। তারপর দীর্ঘদিন বন্ধ অবস্থায় পড়ে ছিল। এরপর তার কাছ থেকে হলটি নিয়ে চালুর উদ্যোগ নেন চলচ্চিত্রের প্রোডাকশন ম্যানেজার সাজ্জাদ হোসেন সাগর। তিনি হলটি নতুন করে চালু করেন।

শাহিনুল আশিক/কেএইচটি