১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন কিংবদন্তী অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান। বেঁচে থাকলে আজকের এই দিনে ৮২ বছরে পা রাখতেন তিনি। 

নন্দিত এই অভিনয়শিল্পীর পুরো নাম আবু তাহের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান। ইচ্ছে ছিল লেখক হবেন। কিন্তু লিখতে গিয়ে ঘটনাক্রমে জড়িয়ে পড়েন অভিনয়ে। আর এই ভুবনই তাকে দিয়েছে খ্যাতি, জনপ্রিয়তা। প্রায় ছয় দশক মিশে ছিলেন শোবিজে। অভিনয়ের মাধ্যমে কখনও দর্শককে হাসিয়েছেন, কখনও আপ্লুত করেছেন, কখনও আবার ভয় ধরিয়েছেন ভিলেন হয়ে। সব চরিত্রেই নিজের দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। 

১৯৬১ সালে উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ সিনেমায় সহকারী পরিচালক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। প্রথম চিত্রনাট্যকার হিসেবে তিনি কাজ করেছেন ‘জলছবি’ সিনেমায়।

আরও পড়ুন- এটিএম শামসুজ্জামানের যে ইচ্ছেগুলো অপূর্ণ থেকে গেল

শতাধিক চিত্রনাট্য ও কাহিনী লিখেছেন এটিএম শামসুজ্জামান। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- জলছবি, জীবন তৃষ্ণা, স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা, যে আগুনে পুড়ি, মাটির ঘর, মাটির কসম, চিৎকার ও লাল কাজল ইত্যাদি।

তবে ১৯৬৫ সালে অভিনেতা হিসেবে এটিএম শামসুজ্জামানের সিনেমায় অভিষেক ঘটে। ১৯৭৬ সালে আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ সিনেমায় খলনায়ক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। সিনেমার পাশাপাশি অসংখ্য খণ্ড নাটক ও ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন তিনি।

একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য এ অভিনেতার একমাত্র পরিচালিত সিনেমা ‘এবাদত’। জীবদ্দশায় পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন এটিএম শামসুজ্জামান। কাজী হায়াতের ‘দায়ী কে’ সিনেমার জন্য দুটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পান তিনি। এরপর ‘চুড়িওয়ালা’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’ এবং ‘চোরাবালি’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য একই পুরস্কার লাভ করেন তিনি।

টিভি নাটকেও অনন্য এটিএম। বহু ধারাবাহিক ও একক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। এর মধ্যে কালজয়ী কয়েকটি নাটক হলো- ‘রঙের মানুষ’, ‘ভবের হাট’, ‘ঘর কুটুম’, ‘নোয়াশাল’, ‘শীল বাড়ি’ ইত্যাদি। 

এটিএম শামসুজ্জামান ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সূত্রাপুরের দেবেন্দ্রনাথ দাস লেনে নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছিলেন। তার মরদেহ জুরাইন কবরস্থানে তার বড় ছেলে কামরুজ্জামান কবীরের পাশে সমাহিত করা হয়।

এনএইচ